ঢাকা: দল পরিচালনার অর্থ সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় বেকায়দায় পড়েছে বিএনপি। বছরের পর বছর ধরে ব্যর্থ আন্দোলনের নজির গড়ে একদিকে তারা হারিয়েছে আন্তর্জাতিক আস্থা, অন্যদিকে দেশের ভেতরকার অর্থনৈতিক উৎসগুলোও মওকামতো সটকে পড়ার নীতি নিয়েছে।
শুধু তাই নয়, বিএনপির ঘাড়ে বন্দুক রেখে যারা অঢেল বিত্ত-বৈভবের মালিক বনেছেন, অবস্থা বেগতিক দেখে সটকে পড়েছেন তারাও।
এমন পরিস্থিতিতে মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। জামায়াতের আশীর্বাদপুষ্ট ব্যবসায়ী ও সংস্থাগুলোর ওপর সার্বক্ষণিক নজর রেখেছে সব গোয়েন্দা সংস্থাই।
দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থেকে তাই বিএনপির অবস্থা এখন অনেকটাই নাজুক। অর্থ সঙ্কটে খাবি খাচ্ছে পুরো দল। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে যারা আঙুল ফুলে কলাগাছ বনেছেন তারা এখন দলটির সঙ্গে কোনো সম্পর্কের কথা স্বীকারই করছে না।
অর্থের অভাবেই নেতাকর্মীদের নামে থাকা রাজনৈতিক মামলাগুলোতে ঠিকঠাক আইনি সহায়তা দিতে পারছে না কেন্দ্রীয় বিএনপি। সাংগঠনিকভাবে কর্মীও মাঠে নামানো যাচ্ছে না টাকার অভাবে।
দলীয় সূত্র বলছে, টানা অবরোধ আর হরতালের মতো কঠোর কর্মসূচির পথ থেকেও বিএনপিকে সরে আসতে হয়েছে এই টাকারই অভাবে।
সূত্র বলছে, পর্যাপ্ত টাকার সরবরাহ থাকলে খালেদা জিয়ার আন্দোলন কৌশল ভিন্নও হতে পারতো। কিন্তু টাকার সরবরাহ কমে যাওয়ায় দল পরিচালনার প্রয়োজনীয় অর্থ যোগান দিতে ব্যর্থ হয় হাইকমান্ড।
মাসের পর মাস বকেয়া পড়ে যায় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের অফিস স্টাফ আর চেয়ারপারসন’স সিকিউরিটি ফোর্সের (সিএসএফ) সদস্যদের বেতনের টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, টানা অবস্থানের ইতি টেনে খালেদা জিয়া যখন তার কার্যালয় ছেড়ে বাসায় ফিরে যান তখনই তার কার্যালয় স্টাফদের ২/৩ মাসের টাকা বকেয়া ছিলো। এখন তা আরো বেড়েছে। সরবরাহ অনিয়মিত হয়ে পড়েছে সিএসএস এর প্রয়োজনীয় অর্থেরও।
এদিকে টানা কয়েক মাসের আন্দোলনে ক্ষতির শিকার তৃণমূল কর্মী ও তাদের পরিবারগুলো কেন্দ্রীয় বিএনপি থেকে আইনি সহায়তা ও পুনর্বাসনের জন্য আর্থিক কোনো সুবিধা না পেয়ে ভীষণ ক্ষুব্ধ। স্থানীয় নেতারা যে যার সাধ্যমতো টাক খরচ করে কর্মীদের পাশে দাঁড়ালেও সে প্রচেষ্টাটেও এখন ভাটার টান।
দলটির কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত তাই এখন অর্থেরই জন্যই হাহাকার। দল গোছানোর মূল চ্যালেঞ্জ এখন এই টাকার অভাবই।
এমন পরিস্থিতিতে তাই এখন অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলাই হয়ে উঠেছে বিএনপির মূল চ্যালেঞ্জ। দল পুনর্গঠনের জন্য এই অর্থের কোনো বিকল্প নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৮ ঘণ্টা, মে ৯, ২০১৫
জেডএম