ঢাকা, শনিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রিত: খালেদা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৯ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০১৫
বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রিত: খালেদা ছবি:দেলোয়ার হোসেন বাদল / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বিগত বিএনপির আমলে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে পৃথক করা হলেও এখন পর্যন্ত বিচার বিভাগ স্বাধীন নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়া।
 
শনিবার (৪ জুলাই) সুপ্রিমকোর্ট বার মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্যের ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

 
 
শনিবার ইফতারির নির্ধারিত সময় ৬টা ৫৩ মিনিট হলেও এর মাত্র আট মিনিট আগে হলরুমে আসেন খালেদা জিয়া। ইফতারির পর আরো পাঁচ মিনিট অর্থাৎ ৬টা ৫৮ মিনিট পর্যন্ত বক্তব্য রাখেন তিনি।

খালেদা জিয়া বলেন, আমরা আইনের শাসনে বিশ্বাস করি, গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। গণতন্ত্র না থাকলে দেশে আইনের শাসন থাকে না। আইনজীবী, বিচারকদের আন্দোলনে আমরাই বিচার বিভাগ আলাদা করে দিয়েছিলাম। বিচার বিভাগ আলাদা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এখনো স্বাধীন হয়নি।
 
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, বিচারকরা এখন আরো বেশি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছেন। বিচারকদের আপসারণের ক্ষমতা সংসদে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার মানে বিচার ব্যবস্থাকে আরো বেশি নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
 
তিনি বলেন, দেশে ন্যায় বিচার নেই, আইনের শাসন নেই। কারণ আমরা দেখেছি সরকারি দল হলে এক রকম বিচার হয়, আর বিরোধী বা সাধারণ মানুষের বেলায় আরেক রকম বিচার হয়। এ বিচার ব্যবস্থা চলতে পারে না। অপরাধী যে দলেরই হোক না কেন আইনের চোখে সবাই সমান।
 
সারা দেশে বিএনপি এবং বিশ দলীয় জোটের নেতাদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে দাবি করে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির কি সব অপরাধী? আর আওয়ামী লীগ বা চৌদ্দ দলের সবাই আজ সুফি হয়ে গেছে?
 
তিনি বলেন, বিএনপি কোনো সন্ত্রাসী দল নয়, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, শান্তিতে বিশ্বাস করে, ন্যায় বিচারে বিশ্বাস করে।
 
নির্দলীয়-তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবির তিনমাসের আন্দোলনে বিএনপি কিংবা বিশদলের নেতাকর্মীরা কোনো ধরনের সন্ত্রাস করেনি বলেও বক্তৃতায় দাবি করেন খালেদা জিয়া।  

বর্তমানে আওয়ামী লীগ পদে পদে সন্ত্রাস করছে দাবি করে খালেদা জিয়া আরো বলেন, পঁচানব্বই-ছিয়ানব্বইয়ে গান পাউডার দিয়ে পুড়িয়ে আওয়ামী লীগ মানুষ হত্যা করেছে। তারা সন্ত্রাসী। আওয়ামী লীগ লগী-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে।
 
তিনি বলেন, বিএনপি এবং বিশদলের আন্দোলন বন্ধ হতো না, যদিনা পুলিশ বাসে আগুন দিত। বাসে আগুন ‍দিয়েছে পুলিশ, পেট্রোলবোমা মেরেছে পুলিশ। এভাবে মানুষ হত্যা করে বিএনপি এবং বিশ দলের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। জেলে আটকে রাখা হয়েছে।
 
এই পুলিশের নামে কেন মামলা হয় না, পুলিশকে কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় না? প্রশ্ন রাখেন খালেদা জিয়া।
 
আওয়ামী লীগের ভোট পাওয়ার কোনো অধিকার নেই দাবি করে খালেদা জিয়া আসন্ন বার কাউন্সিল নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেলকে জয়ী করার জন্য আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানান।  
 
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি টিএইচ খানের সভাপতিত্বে ইফতার-মাহফিলে আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ঢাবির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাবির সাবেক প্রোভিসি আফম ইউসুফ হায়দার, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সুপ্রিমকোর্ট বারের সভাপতি ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, সুপ্রিমকোর্ট বারের সাবেক সভাপতি এজে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনসহ বিএনপি এবং বিশ দলীয় জোটের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।    
 
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সুপ্রিমকোর্ট বারের সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ন-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০১৫
এমএইচপি/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।