ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

‘কাউন্সিলের পর বিএনপি মাঠে নামবে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৬
‘কাউন্সিলের পর বিএনপি মাঠে নামবে’ ছবি: রানা / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: আসন্ন কাউন্সিলের পরই বিএনপি আন্দোলনের মাঠে নামবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের স্বার্থে আসন্ন কাউন্সিলের পর আমরা মাঠে নামতে চাই।


 
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় হাফিজউদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ‘গণতন্ত্র ও স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘জিয়া নাগরিক ফোরাম’।

হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, অনেক তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা হয়েছে আমাদের। বিভিন্ন সময় বলা হয়েছে দেশে বিএনপি বলে কোনো দল নেই। এদের ক্ষমতা নেই। আন্দোলন করার মত এদের কোমরে জোর নেই। কাউন্সিলের পর আমরা এসব সমালোচনার জবাব দিতে চাই।
 
কাউন্সিলে গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আসবে জানিয়ে বিএনপির এ নেতা দলের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতৃত্বের মূল্যায়নের জন্য যে মতামত উঠে এসেছে তা আমরা নেত্রীর কাছে তুলে ধরবো। আগামী দিনগুলোতে আপনাদের মূল্যায়ন হবে।
 
তিনি বলেন, এবার কাউন্সিলে দলের গঠনতন্ত্রে কিছু পরিবর্তন আসছে। কেন্দ্রীয় কমিটির পাশাপাশি কিছু উপ-কমিটি বা কিছু জাতীয় কমিটি করা হবে। সেই উপ-কমিটিগুলো বছরজুড়ে জাতীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কর্মকাণ্ড চালাবে। আশা করি ত্যাগী নেতারা এসব উপ-কমিটিগুলোতে বা জাতীয় কমিটিতে স্থান পাবেন।
 
বিচার বিভাগের সমালোচনা করে হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, অসংখ্য মিথ্যা মামলায় আমরা জর্জরিত। আমরা কারাগারে গিয়েছি, নির্যাতিত হয়েছি। কিন্তু সাত খুনের আসামি নূর হোসেনকে একটি দিনের জন্যও রিমান্ডে নেওয়া হয়নি। রিমান্ডে যাচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
 
তিনি বলেন, বিচার বিভাগের কাছে মানুষ যা আশা করে তা তারা পাচ্ছে না। প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তির মধ্যে অনেক ফারাক তৈরি হয়েছে। এর প্রধান কারণ বিচারক পদে যারা নিয়োগপ্রাপ্ত হন তাদের জন্যে কোনো নীতিমালা নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে বিচারক নিয়োগপ্রাপ্ত হচ্ছেন।
 
বিএনপির এ ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বিচারপতিদের জবাবদিহিতার কোনো স্থান নেই। তারা নিজেদের বিবেকের কাছে জবাবদিহি করবেন। বাহাত্তরের সংবিধানে ছিল বিচারপতিরা জবাবদিহি করবেন জাতীয় সংসদের কাছে। বাকশাল আমলে রাষ্ট্রপতির কাছে জবাবদিহি করার কথা বলা হয়েছিল। এখন সেটিও নেই।   
 
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মিয়া মো. আনোয়ার হোসেন লায়নের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু।
 
তিনি বলেন, সমাজে সত্য না থাকলে গণতন্ত্র থাকে না। স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা থাকে না। সুপ্রিম কোর্টের দায়দায়িত্ব হলো সংবিধান পালন করা। কিন্তু আজ সুপ্রিম কোর্টের দিকে তাকালে দৃষ্টি অন্ধ হয়ে যায়।
 
বিএনপির জাতীয় কাউন্সিলের বিষয়ে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আবেদন জানানোর পরও দেশের বৃহত্তম দল বিএনপি কাউন্সিল করার জন্য স্থান বরাদ্দ পাচ্ছে না। কোথায় কাউন্সিল করবো এখনও জানি না। এই হচ্ছে দেশের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি।
 
সভায় আয়োজক সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন। তাদের অধিকাংশই আসন্ন কাউন্সিলের মাধ্যমে দলের ত্যাগী, নির্যাতিত নেতাদের নেতৃত্বে দেখতে চান বলে বক্তব্য দেন। কমিটি গঠনে যেন রাজনৈতিক বাণিজ্য না হয় সে বিষয়েও উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।
 
প্রায় একই সময়ে প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘অল কমিউনিটি ফোরাম’ আয়োজিত আলোচনা সভায় বিএনপির আরেক ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের যড়যন্ত্র একদিন উন্মোচিত হবে। সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের ভেতরে রক্তক্ষরণ বন্ধ হবে না।
 
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বন্দুক ও পুলিশের জোরে ক্ষমতা দখল করে আছে। এভাবে দেশ চলতে পারে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৬
এমএইচপি/টিএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।