ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

আন্দোলনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতেই সার্চ কমিটির বিরোধিতা

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৭
 আন্দোলনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতেই সার্চ কমিটির বিরোধিতা প্রতিকী ছবি

ঢাকা: নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন উপলক্ষে গঠিত সার্চ কমিটি নিয়ে বিএনপির বক্তব্যকে সন্দেহের চোখে দেখছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গঠন হতে যাওয়া নির্বাচন কমিশনের বিরোধিতার মাধ্যমে আন্দোলনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতেই বিএনপি সার্চ কমিটি নিয়ে উদ্দেশ্যমূলক বিতর্ক তৈরি করছে অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতাদের।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে ২৫ জানুয়ারি (বুধবার) একটি সার্চ কমিটি গঠন করেছেন রাষ্ট্রপতি।

এই কমিটি গঠনের পর পরই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিএনপি।

সার্চ কমিটিতে আওয়ামী লীগের সমভাবাপন্ন ব্যক্তিদের নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে দলটি।

তবে সার্চ কমিটি গঠনের সঙ্গে সঙ্গে বিএনপির এ ধরণের বক্তব্য ও অবস্থানকে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরির কৌশল বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা।

আওয়ামী লীগের ওই নেতাদের মতে, গত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপি বর্জন করে সেই নির্বাচন বানচালের জন্য অরাজকতা তৈরি করেছিলো। আবারও এ ধরণের একটি পরিস্থিতি তৈরির অপচেষ্টা থেকেই বিএনপি এই সার্চ কমিটি নিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছে। এর বিরোধিতা করার পরিকল্পনা বিএনপি আগেই করে রেখেছিলো বলে আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন।  

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বিএনপি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে এসে বলেছিলো রাষ্ট্রপতির উপর তাদের আস্থা আছে। রাষ্ট্রপতি সবার ঊর্ধ্বে।

অথচ, যখনই রাষ্ট্রপতি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি সার্চ কমিটি গঠন করলেন তখনই বিএনপি সমালোচনা শুরু করে দিয়েছে। জানি না তাদের উদ্দেশ্য কী? হয় তো তাদের কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। কিন্তু সেটা থাকা ঠিক হবে না। আমি মনে করি এই সার্চ কমিটি গ্রহণযোগ্য এবং এই কমিটি একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন উপহার দিতে পারবে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, সংবিধানে রাষ্ট্রপতির যে দায়িত্ব দেওয়া আছে সে অনুযায়ীই তিনি সার্চ কমিটি গঠন করেছেন। যাদের নিয়ে গঠন করেছেন জাতীয় পর্যায়ে তাদের ভাবমূর্তি খুবই ভাল, খুবই উজ্জল।

পেশাগত জীবনে তারা স্ব স্ব ক্ষেত্রে সফলতার পরিচয় দিয়েছেন। তারা কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করেন না। যদি কোনো রাজনৈতিক আদর্শের প্রতি বিশ্বাসও থাকে কিন্তু যে দিন থেকে তারা শপথ নিয়েছেন সেদিন থেকে তাদের নৈতিক দায়িত্ব নিরপেক্ষ হওয়া। আমার দৃঢ় বিশ্বাস তারা দায়িত্ব পালনের জন্য খুবই যোগ্য, অতীত তাদের খুবই ভাল। বিএনপি যে অভিযোগ করেছে আমার মনে হয় এই ব্যক্তিদের সম্পর্কে আরও ভালভাবে জেনে কথা বললে ভাল হতো। জানি না তাদের মনে কি আছে।

গত নির্বাচন বানচালের জন্য তারা সব ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছিলো। এটাও মনে হচ্ছে আন্দোলনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করার পদক্ষেপ। মনে হয় সার্চ কমিটি গঠনের পর কি বক্তব্য দেয়া হবে, সেটা তাদের তৈরি করাই ছিলো । তবে যদি আবার আন্দোলনের নামে তারা নাশকতার মধ্যে যায় তবে জনগণই তাদের মোকাবেলা করবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, রাষ্ট্রপতি একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য নির্দলীয় প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি সার্চ কমিটি জাতিকে উপহার দিয়েছেন। এই কমিটি একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে যথাযথ ভূমিকা রাখবে। বিএনপির এটি পুরোনো অভ্যাস। বিএনপি চেয়েছিলো তাদের রাজনৈতিক সমভাবাপন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে সার্চ কমিটি গঠন করে দেবেন রাষ্ট্রপতি। এটা জাতিরও কাম্য নয়, কারো কাম্য নয়। এই ধরণের একটি অভিযোগ দাঁড় করিয়ে রাষ্ট্রপতি যিনি সংবিধানের রক্ষক ও রাষ্ট্রপ্রধান তাকে কোনো বিতর্কের জায়গায় না নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৭
এসকে/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।