ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

‘জঙ্গিবাদের কথা বলে সরকার ফায়দা নিতে চাইছে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৭
‘জঙ্গিবাদের কথা বলে সরকার ফায়দা নিতে চাইছে’ ডিআরইউতে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলামসহ অন্যান্য বক্তারা

ঢাকা:  জঙ্গিবাদের কথা বলে সরকার ফায়দা নিতে চাইছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে বিএনপির মানবাধিকার সেল কর্তৃক প্রকাশিত 'ফাইটিং মিলিটেন্সি ইন কোয়েস্ট অব পিস' (শান্তি সংগ্রামে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই) বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নাইন ইলেভেনের ঘটনা বিশ্ব রাজনীতিকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।   তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের বীজ বপনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

মানুষকে বোকা না বানিয়ে সত্যিকার অর্থে জঙ্গিবাদ দমন করুন। চলমান সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হলো দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা এবং মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া।

সন্ত্রাসবাদ দেশীয় কোনো বিষয় নয় মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, নাইন ইলেভেনের পর গোটা বিশ্বের শান্ত চেহারা পরিবর্তিত হয়ে গেছে।   আজ আফগানিস্থান, সিরিয়া, লিবিয়া,  মিশর সব জায়গায় অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে গণতন্ত্রের সূতিকাগার বলা হতো, আজ সেখানে মুসলমানরা নির্যাতিত হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সিরিয়ায় যখন লাখ লাখ মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, ফিলিস্তিনে শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে তখন কাকে টেরোরিস্ট বলবেন। একইভাবে বাংলাদেশে যখন মায়ের পেটের শিশু গুলিতে নিহত হয়, সাংবাদিক গুলিতে মারা যায়, সাংবাদিক দম্পতি খুন হন তখন কাকে সন্ত্রাসী বলবেন। পুলিশের বুটের তলায় গণতন্ত্রের আন্দোলনকারীরা যখন পিষ্ট হয় তখন সন্ত্রাস কাকে বলবেন এ বিষয়টি ভাবতে হবে।

পাকিস্তান পিরিয়ডে পাকবাহিনী আমাদের টেরোরিস্ট বলতো, বৃটিশ আমলে সুর্যসেন,  প্রীতিলতা , বাঘা যতীনকে টেরোরিস্ট বলতো। আজ আমাদেরকে সে রকমভাবে টেরোরিস্ট বলা হচ্ছে।   এমনকি সরকারের মন্ত্রী বেগম জিয়ার নাম করে বলেছেন তিনি নাকি টেরোরিস্টের মদদদাতা।

যেখানে গণতন্ত্র থাকবে না সেখানেই টেরোরিজম, জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদের জন্ম হবে।

আমরা এই কথাটি বার বার বলার চেষ্টা করেছি। এই টেরোরিজমকে মোকাবেলা করার জন্য দরকার জাতীয় ঐক্য। ইতালির তাবেল্লা নিহত হলেন।   তারপরের দিন সংবাদ সম্মেলনে  সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানালাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক থেকে বলে দিলেন এর সাথে বিএনপি জড়িত। যাদের জঙ্গি হিসেবে ধরা হয়েছিল তাদের সবাইকে বন্দুকযুদ্ধের নামে মেরে ফেলা হয়েছে।

সম্প্রতি পত্রিকায় দেখলাম বাসায় কয়েকজন মহিলা তাবলীগ সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন তাদের ধরে নিয়ে বলা হল তারা নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন।

২০১৫ সালের পরে আমি প্রেসক্লাবে আটকে আছি কিন্তু মামলা হলো আমি নয়টা নাশকতা করেছি। বেগম খালেদা জিয়া অবরুদ্ধ ছিলেন ৩ মাস। তিনি উড়ে গিয়ে যাত্রাবাড়ী, দারুস সালামে নাশকতা করলেন, বলা হল। এই হচ্ছে সমস্যা। সরকার এখান থেকে ফায়দা নিতে চায়।

আওয়ামী লীগের আমলে জঙ্গিদের নতুন নতুন সংগঠনের সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা সব সময় জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছি, শুধু তাই নয় এর বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি। ২০০৫ সালে আমরা সেটার প্রমাণ করেছি। আপনাদের আমলেই জঙ্গিবাদ বাড়তে থাকে। আপনাদের আমলেই দেখা যায় জঙ্গিদের নতুন নতুন সংগঠনের সৃষ্টি হচ্ছে। আপনারা জঙ্গিদেরকে প্রশ্রয় দেন, লালন করেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মামুন আহমেদের সভাপতিত্বে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাড. খন্দকার মাহবুব হোসেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান  শওকত মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য ইউসুফ হায়দার, দেশ বাঁচাও মানুষ বাচাও আন্দোলনের সভাপতি রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৭
এএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।