ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

‘আমাকে জনগণের সামনে হেয় করার চেষ্টা করছে সরকার’ 

পলিটিক্যাল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৭
‘আমাকে জনগণের সামনে হেয় করার চেষ্টা করছে সরকার’  আদালতে পৌঁছার পর খালেদা জিয়া- ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: সরকার জনগণের সামনে আমাকে হেয় করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র করছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন মামলা দিয়ে আমাকে হেনস্তা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু সফল হয়নি।

বরং এসব করে তারাই জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ’ 

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার পঞ্চম দিনের মতো আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ দাবি উত্থাপন করেন।  


বেলা ১১টা ৫০ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিএনপি প্রধান। তার বক্তব্যের পরে বিচারক ২৩ নভেম্বর এ মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য্য করেন।  

খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘আমাকে যতই মামলা দিয়ে জর্জরিত করা হচ্ছে, তত বেশি মানুষের সহানুভূতি ও সমর্থন পাচ্ছি। জনগণ বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছে। ’

বর্তমান সরকার ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে’ আমার বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা দায়ের করেছে বলে আদালতকে অবহিত করেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা এসব মামলার কোনো ভিত্তি নেই। ’

এর আগে বেলা পৌনে ১১টার দিকে রাজধানীর গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ থেকে আদালতের উদ্দেশে বের হন সাবেক খালেদা জিয়া। তিনি দুপুর ১১টা ৪০ মিনিটে আদালতে পৌঁছান।

এর আগে গত ৯ নভেম্বর খালেদা জিয়া চতুর্থ দিনের মতো আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য রাখেন। এদিন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়া স্থায়ী জামিনের জন্য আবেদন করলে তা খারিজ করে দেন আদালত। পরে বিচারক বৃহস্পতিবার মামলার পরবর্তী সময়ে শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ ধার্য্য করেন।  

এর আগে গত ২ নভেম্বর খালেদা জিয়া দুই মামলায় স্থায়ী জামিনের আবেদন করলে বিচারক তা নাকচ করে দেন। ফলে এখন প্রতি সপ্তাহেই সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন।  

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশিদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

এ ছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক।

২০১০ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন আর রশিদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৭
বিএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।