এ বছর ৬টি সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এগুলো হলো- খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, গাজীপুর ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।
সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থানীয় সরকার পর্যায়ের নির্বাচন হলেও এই নির্বাচনের ফল জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করে। গত বছর ডিসেম্বরে রংপুর এবং মার্চে অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়। গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অনুষ্ঠিত খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের সমর্থিত মেয়র প্রার্থীরা পরাজিত হন।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখেই আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের ইতোমধ্যেই প্রচারে নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের প্রতিটি ভোটারের ঘরে ঘরে গিয়ে সরকারের উন্নয়ন ও বিএনপির নেতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারে মাঠে নামছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও।
নির্বাচন কমিশনের আচরণ বিধি অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার পর মন্ত্রী-এমপিরা নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না। সে কারণে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই প্রধানমন্ত্রীসহ দলের মন্ত্রী-এমপিরা প্রচারে যাবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে সকল বিভাগীয় শহরসহ সারা দেশের বিভিন্ন জেলায় জনসভা করবেন। যেসব সিটি করোপরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেসব সংশ্লিষ্ট বিভাগে প্রধানমন্ত্রীর আগে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। চলতি মাস থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বিভাগীয় সফর শুরু হবে। আগামী ৩১ জানুয়ারি তিনি সিলেটে জনসভা করবেন। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশালে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা করার কথা রয়েছে।
এদিকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের নেতৃত্বে ১৫টি টিম গঠন করা হয়েছে। টিমগুলো সারা দেশে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগ পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার চালাবে। যেসব সিটি করপোরেশনের নির্বাচন আসন্ন সেগুলোতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রচার কাজে অংশ নেবে টিমগুলো।
আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত নির্বাচনে ওই ৫টি সিটি করপোরেশনে এবং ইতোমধ্যে অনুষ্ঠিত ২টি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নেতিবাচক ফলাফলের বিষয়টিকে মাথায় রেখেই আগামী নির্বাচনের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু করেছে দলটি। আগামী নির্বাচনে এসব সিটিতে আবারও আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা পরাজিত হলে দলের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে তারা মনে করছেন।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বাংলানিউজকে বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতে প্রথমেই প্রার্থীর জনপ্রিয়তার বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে। ব্যক্তি ইমেজ সামাজিক অবস্থানকে গুরুত্ব দিয়ে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হবে। নির্বাচনে সরকারের উন্নয়ন ও সফলতা তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি বিএনপির ধ্বংসাত্বক কর্মকাণ্ড ও নেতিবাচক রাজনীতি তুলে ধরা হবে। দলের কেন্দ্রীয় টিমগুলো প্রচারে অংশ নেবে। দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে নামানো হবে।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সিটি করপোরেশনগুলোতে দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে মাঠে নামা হচ্ছে। সরকার যে উন্নয়ন করেছে সেটা যদি মানুষের মাঝে ঠিক মতো তুলে ধরা যায় তবে আমাদের প্রার্থীরা বিজয়ী হবে। গত নির্বাচনের মতো পরিস্থিতি যাতে না হয় সে জন্য আগে থেকেই প্রচারে নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০১১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৮
এসকে/এমজেএফ