ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

হাসপাতালে বিএনপিকর্মীদের স্লোগান, তাদের দমাতে বাঁশি!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০১৮
হাসপাতালে বিএনপিকর্মীদের স্লোগান, তাদের দমাতে বাঁশি!

ঢাকা: একদিকে শুরু হলো স্লোগান। স্লোগানে স্লোগানে কেঁপে উঠলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল। এই স্লোগান দমাতে শুরু হলো মুহুর্মুহু বাঁশি। স্লোগান আর বাঁশির বিকট শব্দে হাসপাতাল এলাকা হয়ে উঠলো যেন রাজপথের সংঘাতস্থল। আর তাতে হাসপাতালের রোগীতো বটেই, আঁতকে উঠতে হলো তাদের স্বজনদেরও।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে শনিবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে আনার পর এমন পরিস্থিতি হজম করতে হয় রোগী ও তার স্বজনদের।

খালেদা জিয়াকে বিএসএমইউতে আনা হয় বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে।

তারও ঘণ্টাখানেক আগে থেকে হাসপাতাল চত্বরে জড়ো হতে থাকেন বিএনপির প্রথম সারির নেতারা। দলটির সিনিয়র নেতা আমান উল্লাহ আমান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরীসহ অন্যরাও সঙ্গে আনেন তাদের সাঙ্গপাঙ্গদের। এখানেও বিষয়টা মানিয়ে নেওয়ার মতো ঠিকঠাক। কিন্তু খালেদাকে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে নিয়ে আসতেই যখন তারা স্লোগান দেওয়া শুরু করলেন, তখনই প্রকম্পিত হয়ে উঠলো চারপাশ। ভবনে ভবনে প্রতিধ্বনিত আওয়াজ মুহূর্তেই পুরো হাসপাতাল প্রাঙ্গণ বানিয়ে ফেলা হলো রাজনীতির ময়দান, জনসমাবেশস্থল।

তাদের দমাতে পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনীর বাঁশির সংকেত বেজে চললো পাল্লা দিয়েই। এতে বিকট শব্দ দূষণে এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো, যেন রাজপথের কোনো সভা-সমাবেশে গণ্ডগোল লেগে গেছে। শব্দের তীব্রতা এতো হতে থাকলো যে, স্বাভাবিক মানুষের কানেই তা অসহ্য লাগতে থাকলো।  

অথচ এ প্রাঙ্গণটি যে হাসপাতালের, তা যেন কারোরই আমলে নেওয়ার বিষয় নয়। দলের প্রধানকে হাসপাতাল প্রাঙ্গণেই স্লোগানে মুখরিত করে স্বাগত জানালেন ‘নেতাকর্মীরা’। বিএনপি নেতাকর্মীদের স্লোগান আর তাদের নিরাপদ দূরত্বে রাখতে নিরাপত্তা বাহিনীর সতর্কতামূলক বাঁশি, চললো প্রায় লম্বা সময় ধরে। সাধারণ রোগীদের অসহায়ত্ব তখন যেন নিয়তির বিধান।

এদিকে দুপুর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের অবস্থানের কারণে কেবিন ব্লকে দশ-এগারো তলার পোস্ট-অপারেটিভ রোগীদেরও পড়তে হয় বিপত্তিতে। কারণ অনেক রোগীকেই অপারেশনের পর রিকভারিতে বাড়তি সময় রাখতে হয়েছে।

নিউরোসার্জারির কর্মচারী মো. মামীন তাই ট্রলি নিয়েই ঘণ্টাখানেক আটকে থাকলেন কেবিন ব্লকের নিচে। আব্দুল আওয়াল নামের এক পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিকে দেখা গেলো হাতে ওষুধ নিয়ে ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলি করছেন, আর বলছেন, ‘আমাকে যেতে দাও রোগীর আপারেশনের ওষুধ নিয়ে যাবো’। কিন্তু তার চিৎকার কার কানে লাগে এই স্লোগানের ঢেউয়ে!

এতো হই-হুল্লোড়, চিৎকার-চেঁচামেচি দেখে হাসপাতাল কর্মচারী মো. মামীনের মুখ থেকে শোনা গেল, ‘এটা কি হাসপাতাল, না রাজনীতির ময়দান’!

বাংলাদেশ সময়: ২২২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৮
ইইউডি/এইচএ/

** ডাক্তার মামুন কই? জানতে চাইলেন খালেদা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।