ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

মানুষের চোখের জলে ভেসে যাচ্ছে বাংলাদেশ: ফখরুল

তামিম মজিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৮
মানুষের চোখের জলে ভেসে যাচ্ছে বাংলাদেশ: ফখরুল সুয়াগাজী ফুলতলী মাঠের জনসভায় বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

সুয়াগাজী ফুলতলী মাঠ, সদর দক্ষিণ (কুমিল্লা): বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যারা বন্দুক-পিস্তল দিয়ে গুলি করে ক্ষমতায় থাকতে চায়, তাদের হুঁশিয়ার করে দিতে চাই—পাকিস্তানি সেনারা বাঙালিদের ধমিয়ে রাখতে পারেনি, এই জালিম সরকারও পারবে না।

বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় কুমিল্লা-১০ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী কারান্তরীণ মনিরুল হক চৌধুরীর সমর্থনে সুয়াগাজী ফুলতলী মাঠে আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারকে আর মানুষ চায় না।

তারা দেশ ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। অসংখ্য মানুষ গুম হয়েছে, দেশে আজ হাহাকার! কারো মা-বাবা, ভাই-বোনকে কেড়ে নিয়েছে। মনিরুল হক চৌধুরী, আব্দুল গফুর ভূঁইয়া, মোবাশ্বের হোসেনের কী অপরাধ? আজ তারা জেলে। মানুষ এই জালিম সরকার থেকে পরিত্রাণ চায়।

‘মানুষের চোখের জলে ভেসে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ মন্তব্য মির্জা ফখরুল বলেন, অনেক শিক্ষিত যুবক আছে, যারা ঢাকায় রিকশা চালায়। তাদের জীবনের স্বপ্ন আজ শেষ, সবকিছু ছারখার হয়ে গিয়েছে!

পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২৭ ডিসেম্বরের পর বিএনপি নেতা-কর্মীদের এলাকায় থাকতে দেবেন না! এটা বলার আপনি কে? আপনি কি জমিদার? এই দেশ ও মাটি আমাদের সবার, আমরা সবাই থাকবো। ৩০ ডিসেম্বর ধানের শীষে ভোট দিয়ে আপনাকে বিতাড়িত করা হবে।

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, আমরা সবাই এক হয়েছি, যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। আমরা সবাই আওয়ামী লীগ সরকারকে সরিয়ে দেব। যতই ভয় দেখাক না কেন, কোনো কাজ হবে না। ধানের শীষ জয়ী করতে না পারলে আমরা কেউ বের হতে পারব না, গণতন্ত্রের মাতা মুক্ত হবে না। সাহস করে দাঁড়াতে হবে। কেন আমরা ভয় করব? মুক্তিযুদ্ধে আমরা পাকিস্তানিদের পরাজিত করেছি। ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মানুষের কাছে যাবেন, ভোট চাইবেন।

খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে ধানের শীষে একটি ভোট ‘ভিক্ষা’ চেয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণ যদি জেগে ওঠে, আল্লাহ ছাড়া পৃথিবীর কোনো শক্তি নাই রক্ষা করবে।

সরকারি দলের নেতাদের উদ্দেশ্যে ফখরুল বলেন, আপনারা এত উন্নয়ন-উন্নয়ন করেন, আপনারা নিজেদের উন্নয়ন করেছেন, তাই তো এত ভয়! ব্যাংক, শেয়ারবাজার লুট করেছেন, মানুষের রক্ত চুষে খেয়েছেন। কোথায় কয়টা বাড়ি তৈরি করেছেন, তা জনগণের জানা আছে। আমরা মানুষের মুক্তি চাই, গণতন্ত্রের মুক্তি চাই। নব্য স্বৈরাচারের হাতে আর এদেশকে ছেড়ে দেওয়া হবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, ক্ষমতায় গেলে আমরা মানুষের মুক্তির জন্য কাজ করব। কৃষক ভাইয়েরা তাদের পণ্যের সঠিক মূল্য পাবেন। শ্রমিকরা তাদের শ্রমের সঠিক মূল্য পাবেন। বেকারদের ভাতা দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগ বলেছিলো—১০ টাকায় চাল খাওয়াবে, এখন ৮০ টাকার নিচে চাল নেই।

নাঙ্গলকোট থানার ওসি নজরুল হককে সরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচন কমিশনকে কিছু বললে তারা বলে, আমরা অসহায়। একজন কমিশনার বললেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। আর সিইসি বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে। একজন প্রার্থী জেলে, আরেকজন পুলিশ নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালায়। আসলে এরা বধির, মানুষের জন্য তাদের মন কাঁদে না।

জনসভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল খান, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু, কুমিল্লা-১০ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরীর মেয়ে সায়মা চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তফা খান সফরী, মো. সালাহ্উদ্দিন ভুইয়া শিশির ও বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৮
টিএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।