ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

ঢাকা-২০

ধানের শীষ নেই, জাপা সরে যাওয়ায় নৌকার পালে হাওয়া

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৮
ধানের শীষ নেই, জাপা সরে যাওয়ায় নৌকার পালে হাওয়া ছবি: বাংলানিউজ

ধামরাই থেকে ফিরে: নৌকা, ধানের শীষ এবং লাঙ্গল। আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির তিন প্রধান দলেরই তিনজন প্রার্থী ছিলেন। আইনের মারপ্যাচে আটকে গেছেন বিএনপি প্রার্থী তমিজ উদ্দিন। মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টির প্রার্থী নৌকাকে সমর্থন দিয়ে সরে গেছে। এখন নৌকার বিপরীতে শক্তিশালী প্রার্থী নেই। যৌথ সিদ্ধান্তে ঐক্যফ্রন্টের হয়ে লড়তে পারবে জেএসডির প্রার্থী। এ হিসাবে ভোটের মাঠে নৌকার পালে হাওয়া লেগেছে বলে মনে করছেন ভোটাররা।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী খান মোহাম্মদ ইসরাফিল খোকন বুধবার স্থানীয় এক জনসভায় নৌকার প্রার্থী আওয়ামী লীগের বেনজির আহমেদকে সমর্থন দিয়ে সরে দাঁড়িয়েছেন। ফলে ভোটের মাঠে জট কেটে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা জেলার শেষ সীমান্তে ধামরাই উপজেলা নিয়ে গঠিত ঢাকা-২০ আসনে আবারও সরকার দলীয় প্রার্থীর সম্ভাবনা দেখছেন ভোটাররা।


 
ধামরাইয়ের ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় খোকন বলেন, আমার দলীয় নেতা-কর্মীদের নৌকায় ভোট দেওয়ার পাশাপাশি নৌকার বিজয়ের জন্য কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি। ছবি: বাংলানিউজএ পরিস্থিতিতে বেনজির আহমেদ বৃহস্পতিবার বাংলানিউজকে বলেন, পরিস্থিতি খুব ভাল। এ মুহূর্তে শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।
 
তিনি বলেন, আমার এলাকায়  গ্রামের মানুষ খুব শান্ত-শিষ্ট। কোনো সমস্যা নাই। ভোটের দিন ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবেন।
 
একাদশ সংসদ নির্বাচনে লড়তে এ আসনে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের বেনজির আহমেদ, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির তমিজ উদ্দিন, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির খান মোহাম্মদ ইসরাফিল ছাড়াও দুই মান্নান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন।
 
তারা হলেন- হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আব্দুল মান্নান এবং তারা প্রতীক নিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির এমএ মান্নান।
 
সপ্তাহখানেক আগে বিএনপির প্রার্থী তমিজ উদ্দিনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। তমিজ উদ্দিনের জায়গায় ধানের শীষের কোনো বিকল্প প্রার্থী নেই। এ মুহূর্তে আ স ম আব্দুর রবের জেএসডির এমএ মান্নানই ঐক্যফ্রন্টের ভরসা হতে পারে।
 
বর্তমানে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপেদেষ্টা, ধামরাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি এবং সাবেক এমপি তমিজ উদ্দিন। তিনি অতীতে এক সময়ে এলডিপিতে যোগ দিয়ে আবারও বিএনপিতে ফিরে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদের কাছে পরাজিত হন।
 
২০০১ সালে ধামরাই উপজেলা ঢাকা-১৩ আসনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২০০৮ সালে পুনর্নির্ধারণের ফলে ঢাকা মহানগর এলাকায় ৭টি নতুন আসন যোগ হয়, যার ফলে রাজধানীতে আসন সংখ্যা ১৩ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয় ২০টি। পূর্বের ঢাকা-১৩ এখন ঢাকা-২০।
 
স্থানীয় নির্বাচনেও দুই প্রধান দলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল বেশ। ১৯৯১ সালে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে তমিজ উদ্দিনের কাছে বেনজির আহমেদ প্রায় ১৭ হাজার ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। উপজেলা পরিষদে নির্বাচন করে বর্তমান এমপি এম এ মালেক বিএনপির তমিজ উদ্দিনের কাছে পরাজিত হন।
 
এ আসনে বর্তমানে মোট ভোটার ৩ লাখ ২০ হাজার ১৪৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৮ হাজার ৪৬০ জন আর নারী ভোটার ১ লাখ ৬১ হাজার ৬৮৫ জন।
 
ভোটাররা মনে করছেন, বর্তমান আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যের জায়গায় নতুন প্রার্থী দেওয়ায় ভোটারাও বিকল্প হিসেবে একজনকে বেছে নিতে পারছেন। তবে বিএনপির প্রার্থী না থাকায় এখন লাঙ্গলের প্রার্থীর সঙ্গেই লড়াইটা জমে উঠবে।
 
ধামরাই উপজেলা কলেজ রোডের পাশে চায়ের দোকানদার মো. আরিফ বলেন, বিএনপির প্রার্থী ভোটে নাই, জাতীয় পার্টিও সমর্থন আওয়ামী লীগের জোটে। ভোটাররা ভোট দিতে গেলেই এখন হলো, ফল আর কতক্ষণ!
 
ইসলামপুরের বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ঢাকা-২০ তুলনামূলক গ্রাম এলাকা। এখানে ভোটারা প্রকাশ্যে বিভক্ত নয়। মনে মনে ভোটের খবর থাকলেও প্রকাশ্যে কোন বিরোধ নাই।  
 
বাংলাদেশ সময়: ২৩০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৮
এমআইএইচ/ইএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।