গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের নির্বাচনে ২৯৮টি আসনের মধ্যে ২৮৮টি আসনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট। নির্বাচনে মাত্র সাতটি আসনে জিততে পারে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
এরপর ৩১ ডিসেম্বর বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটি ও পরে সন্ধ্যায় তাদের জোটের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, কারচুপির প্রতিবাদে বিএনপি ও জোটের নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেবেন না। তারা নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে অবস্থান জানিয়ে দেন।
সেদিন (৩১ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব ও ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যেহেতু আমরা নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি করেছি, সেহেতু শপথ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও জোটভুক্ত গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু বুধবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে বলেন, ‘শপথ নেওয়ার সময় বৃহস্পতিবারই শেষ হয়ে যাচ্ছে না। আর আমরা এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্তে আছি শপথ নিচ্ছি না। ’
বিএনপির নির্বাচিত সাত এমপি হলেন- মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (বগুড়া-৬ আসন), মোশারফ হোসেন (বগুড়া-৪), জাহিদুর রহমান (ঠাকুরগাঁও-৩), আমিনুল ইসলাম (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২) ও হারুনুর রশিদ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩)। আর গণফোরামের দুই এমপি হলেন- সুলতান মোহাম্মদ মনসুর (মৌলভীবাজার-২) ও মোকাব্বির খান (সিলেট-২)।
গুঞ্জন রয়েছে বিএনপির সদস্যরা শপথ না নিলেও গণফোরামের নির্বাচিত দুই জন সংসদ সদস্য শপথ নিতে পারেন- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে দলের সাধারণ সম্পাদক মন্টু বলেন, ‘জোটগতভাবে নির্বাচন ও আন্দোলন করছি। এখনো জোটেই আছি। সুতরাং যা করার জোটগতভাবেই করবো। আলাদা কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। ’
এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বুধবার সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে ছিলাম। তবে নির্বাচন পরবর্তী সিদ্ধান্ত দলের মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বলতে পারবেন। ’
সিলেট-২ আসন থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টভুক্ত গণফোরামের ‘উদীয়মান সূর্য প্রতীক’ নিয়ে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘যে এলাকার জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে তাদের মতামতের বিষয় আছে। আমি একটা দলের মনোনয়নে নির্বাচিত হয়েছি, সে দলের বর্ধিত সভা আছে ৫ জানুয়ারি। দলের সিদ্ধান্তেরও একটা বিষয় আছে। তাছাড়া শপথ গ্রহণ বৃহস্পতিবার শুরু হলেও ৯০ দিন সময় আছে, এর মধ্যেই ঠিক করা হবে আমি সংসদে শপথ নেবো কি নেবো না।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ব্যস্ততা দেখিয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৮
এমএইচ/টিএম/এইচএ/