ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

নাজমুল হুদা পেলেন ১৬৮ ভোট, লতিফ সিদ্দিকীর ৩১১

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০১৯
নাজমুল হুদা পেলেন ১৬৮ ভোট, লতিফ সিদ্দিকীর ৩১১ বাম থেকে ব্যরিস্টার নাজমুল হুদা ও ব্যারিস্টার রতিফ নিদ্দিকী।

ঢাকা: সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবেক মন্ত্রী এবং নানাভাবে আলোচিত প্রভাবশালী দুই নেতা নিজ দলচ্যুত হয়ে গো হারা হেরেছেন। এদের একজন হলেন বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্যরিস্টার নাজমুল হুদা। অন্যজন হলে টাঙ্গাইলের সিদ্দিকী পরিবারের বড় ছেলে সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা লতিফ সিদ্দিকী।

নির্বাচন কমিশনের ফলাফলের তালিকা থেকে দেখা গেছে, ঢাকা-১৭ আসনে ২ লাখ ৮ হাজার ৬৮৭টি ভোট পড়ে। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিল ১০ জন।

তিনি স্বতন্ত্র থেকে সিংহ মার্কায় নির্বাচনে অংশ নিয়ে ১৬৮ ভোট পেয়েছেন। এখানে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৬১০ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চিত্র নায়ক ফারুক (আকবর হোসেন পাঠান) জয়লাভ করেছেন।
 
২০১০ সালের ২১ নভেম্বর (রোববার) সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে দলের সব স্তর থেকে বহিষ্কার করে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। সে সময় নাজমুল হুদা ছিলেন বিএনপির ১ নম্বর ভাইস চেয়ারম্যান।
 
তাকে বহিষ্কার করার কয়েক মাস পরে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদার কাছে দুঃখ প্রকাশ করে আবার দলে ভেড়েন তিনি। এরপর ২০১২ সালের ৬ জুন তিনি নিজেই দল থেকে পদত্যাগ করেন। ওই বছর ২৩ মে বেগম খালেদা জিয়াকে সংলাপে বসার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে প্রস্তাব দেওয়ার অনুরোধ জানালে সে অনুরোধ না রাখায় নিজেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন নাজমুল হুদা।
 
পরবর্তীতে ২০১২ তিনি ১০ আগস্ট বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট (বিএনএফ) নামে একটি দল গঠন করেন। তবে কিছুদিনের মাথায় তাকে এ দল থেকেও বহিষ্কার করা হয়।
 
২০১৫ সালে তিনি গঠন করেন তৃণমূল বিএনপি নামের আরেকটি দল। দলটি নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন না পাওয়ায় নির্বাচনে নাজমুল হুদা আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন কিনলেও শেষ পর্যন্ত স্বতন্ত্র থেকে ভোটের অংশ নেন।
 
এদিকে এক সময়ে দুর্দন্ড প্রতাপশালী লতিফ সিদ্দিকীও আওয়ামী লীগ থেকে ছিটকে পড়ে এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র থেকে ভোটে দাঁড়ান। যদিও ভোটের কয়েকদিন আগে নির্বাচন কমিশনে এসে বর্জনের ঘোষণা দেন।
 
২০১৫ সালে লন্ডনে একটি অনুষ্ঠানে হজ নিয়ে মন্তব্য করায় মন্ত্রিত্ব পদ হারানোর পর আওয়ামী লীগের দলীয় পদও হারান টাঙ্গাইলের প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। এরপর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম টাঙ্গাইল-৪ আসনটি শূন্য ঘোষণার জন্য স্পিকারকে চিঠি দেন। সে অনুযায়ী স্পিকার নির্বাচন কমিশনকে বিরোধটি নিষ্পত্তি করতে বললে শুনানির ব্যবস্থা গ্রহণ করে তা নিষ্পত্তি করে নির্বাচন কমিশন। সে পরিপ্রেক্ষিতে লতিফ সিদ্দিকীর সংসদ সদস্য পদটি শূণ্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়।
 
লতিফ সিদ্দিকী এবারও টাঙ্গাইল-৪ আসনে থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই আসনে ভোট দিয়েছেন ২ লাখ ৬৩ হাজার ৯৭৩জন। ট্রাক মার্কায় ভোটে অংশ নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৩১১ টি ভোট। এখানে ২ লাখ ২৪ হাজার ১২ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ হাছান ইমাম।
 
নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগের চেয়েও কম ভোট পাওয়ায় তারা দু’জনেই জামানত হারিয়েছেন।
 
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১ হাজার ৮৬১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বিন্দ্বিতা করেন। এদের মধ্যে ১ হাজার ৪০জন প্রার্থী জামানত হারান।
 
গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদের ২৯৯ আসনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। গাইবান্ধা-৩ আসনের একজন প্রার্থী মৃত্যুবরণ করায় সে আসনে ভোটগ্রহণ হবে ২৭ জানুয়ারি। আর ব্রাহ্মবাড়িয়া-২ আসনের ৩টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত হওয়ায় সেখানে ৯জানুয়ারি পুনর্ভোটের পর আসনটিতে ফল প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।
 
অবশিষ্ট ২৯৮ আসনের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২৫৭টি আসন, জাতীয় পার্টি ২২টি আসন, বিকল্পধারা বাংলাদেশ ২টি আসন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ৩টি আসন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ ২টি আসন পেয়েছে, জাতীয় পার্টি-জেপি ১টি আসন ও বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন ১টি আসন পেয়েছে।
 বিএনপি ৫টি আসন, গণফোরাম ২টি আসন পেয়েছে। আর স্বতন্ত্র থেকে ৩জন প্রার্থী জয়লাভ করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০১০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৯
ইইউডি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।