ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

শপথ নেওয়া হলো না সৈয়দ আশরাফের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১৯
শপথ নেওয়া হলো না সৈয়দ আশরাফের সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ফাইল ফটো

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ১৯৯৬ সালে। এরপর থেকে টানা সংসদ সদস্য পদে নির্বাচিত হয়ে আসছিলেন তিনি। 

এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও কিশোরগঞ্জ-১ (সদর ও হোসেনপুর) আসনে তিনি জয়ী হয়েছিলেন নৌকা প্রতীকে।  

অসুস্থ অবস্থায় বিদেশে চিকিৎসাধীন থাকার কারণে একদিনের জন্যও ভোটারদের কাছে যেতে পারেননি।

এরপরও পঞ্চমবারের মতো সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করে কিশোরগঞ্জের মানুষ। আজীবন তিনি যেমন মানুষকে ভালোবেসেছেন তেমনি তার অনুপস্থিতিতেও রায় দিয়ে এর প্রতিদান দিয়েছে জনগণও।

পড়ুন>> সৈয়দ আশরাফের বর্ণাঢ্য জীবন   

বৃহস্পতিবার (০৩ জানুয়ারি) নতুন সংসদ সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠিত হয়। তিনি অসুস্থ জানিয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে শপথ নেওয়ার জন্য সময় চান। কিন্তু এরপরও শপথ নেওয়া হলো না বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদের।  

ব্যাংককের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সেখানকার একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি।

১৯৫২ সালে ময়মনসিংহ শহরে জন্ম নেওয়া সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পেশা ব্যবসায়ী হলেও রাজনীতিতে হাতেখড়ি শৈশবেই। পারিবারিক ঐতিহ্যের সূত্র ধরে তিনি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।  

স্বাধীনতার পর তিনি বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর যুক্তরাজ্য চলে যান তিনি।  

প্রবাস জীবনে সৈয়দ আশরাফ যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আশরাফুল ইসলাম ১৯৯৬ সালে দেশে ফিরেন এবং কিশোরগঞ্জ সদর আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।  

এ সময় তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালের ১ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য হন।  

২০০৮ সালের নির্বাচনেও সৈয়দ আশরাফ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তখন দায়িত্ব পান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে। ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান সৈয়দ আশরাফ।  

২০০৭ সালে জরুরি অবস্থার মধ্যে শেখ হাসিনা গ্রেফতার হওয়ার পর দলের হাল ধরেন তিনি। ১/১১ পরবর্তী পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল যখন কারাগারে তখন যুগ্ম সাধারণ আশরাফ ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।  

এ সময় তিনি সংকটের মুখে পড়া আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ২০০৯ সালের জুলাইয়ে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগ পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্বে ছিলেন।  

বিশ্বস্ততার পুরস্কার হিসেবে ওই জাতীয় সম্মেলনে সৈয়দ আশরাফ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। পরপর দুইবার তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলনে সৈয়দ আশরাফকে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ০১৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৯ 
ইএস/এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।