একাদশ জাতীয় সংসদের বিরোধীদলের নেতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর জাপাতে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে। এ দলটি বর্তমানে সংসদে বিরোধীদলের ভূমিকায় রয়েছে।
আবার দলটির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের নিজেকে দলের চেয়ারম্যান দাবি করছেন এবং বিরোধীদলের নেতার দায়িত্ব পাওয়ার জন্য স্পিকারের কাছে পাল্টা চিঠি পাঠিয়েছেন। এ পাল্টাপাল্টি ঘটনায় জাপা এখন কার্যত দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। যেকোনো মুহূর্তে আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙেও যেতে পারে। এ পরিস্থিতিতে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলের ভূমিকার ক্ষেত্রে সংকট তৈরির আশঙ্কা রয়েছে। জাপার এ সংকট বিরোধীদলের ভূমিকার উপর প্রভাব পড়তে পারে। তবে আওয়ামী লীগ সেটা মনে করছে না।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যাযের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাপার এ অভ্যন্তরীণ সংকটকে সংসদে বিরোধীদলের ক্ষেত্রে তারা কোনো সংকট দেখছেন না। তবে জাপা এ সংকট কাটিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সংসদে ভূমিকা রাখুক আওয়ামী লীগ সেটা প্রত্যাশা করে।
আওয়ামী লীগের ওই নেতারা আরও জানান, জাপা সংসদে বিরোধীদলের ভূমিকায় আছে। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে দলটি ভেঙে গেলে বিরোধীদলের ভূমিকার উপর কোনো প্রভাব পড়বে না। কারণ প্রত্যেক সংসদ সদস্যই আলাদা আলাদাভাবে সংসদে নোটিশ দেন, আলোচনা করেন, কোনো বিষয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মত দেন। তাই জাপা ভেঙে গেলে সংসদের বা আওয়ামী লীগের কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয় বলে তারা মনে করেন।
জাপার এ সংকট সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, জাপা সংসদে যথাযথভাবে বিরোধীদলের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এ দলটি নির্বাচন বর্জন করেনি, দলটির গণভিত্তি নেই সেটা বলবো না। আশা করি, দলটি এ সমস্যা কাটিয়ে উঠবে। তবে তাদের এ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমরা কোনো ভূমিকা রাখতে চাই না। তাদের এ অভ্যন্তরীণ সংকটে আমরা কোনো সুযোগ নিতে চাই না।
জাপা ভেঙে গেলে সংসদে বিরোধীদলের সংকট দেখা দেবে কি-না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি ভবিষ্যৎবাণী করতে চাই না। তখন কি হবে সেটা সময়ই বলে দেবে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, জাপাতে যে সংকট, সেটা আমরা তাদের অভ্যন্তরীণ সংকট হিসেবে দেখছি। এটা সংসদে প্রভাব পড়বে বলে মনে করি না। বিরোধীদলের নেতা নিয়ে যে বিরোধ, সেটা সংবিধান অনুযায়ী স্পিকার সমাধান দেবেন। আসলে প্রত্যেক সংসদ সদস্যই আলাদা আলাদাভাবে নোটিশ দেন এবং আলদা আলাদাভাবেই সংসদে কথা বলেন। এতে বিরোধীদল সংকট তৈরি হওয়ার কোনো বিষয় নেই।
বাংলাদেশ সময়: ০৫০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৯
এসকে/আরবি/