শনিবার (০৫ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জিয়া শিশু কিশোর মেলা কেন্দ্রীয় সংসদ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
গয়েশ্বর বলেন, আমরা যারা বিরোধী দলে রয়েছি, তারা কষ্টে আছি।
‘আবার অতিদায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাদের কিছু কিছু নেতা জেলখানায় নেত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। এটা নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলছেন। তারা যে নেত্রীর মুক্তির জন্য খুব বেশি আন্তরিক, সেটা আমাদের ও জনগণের মধ্যে আশ্বস্ত করতে গিয়ে একটা জিনিস ভালো করেছেন। ম্যাডামের যে আপসহীন উপাধি আছে, সেটা খারিজ করতে গিয়ে তারা ধরা খাইছেন। অর্থাৎ খালেদা জিয়া সরকারের সঙ্গে কোনো সমঝোতা ও আপস করবেন না বা প্যারোলে মুক্তি নেবেন না। আর আমি মনে করি, খালেদা জিয়াকে অনুকম্পা করার যোগ্যতা বাংলাদেশের কারো নেই। ’
তিনি বলেন, হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে। আমরা আমাদের চেষ্টা করে যাবো। আর গণতন্ত্রের প্রতি যদি শ্রদ্ধাবোধ থাকে তাহলে গণতন্ত্রের মুক্তির আন্দোলন আমরা করবো।
‘আন্দোলন যতটুকু করছি, আরো যতটুকু যৌক্তিকভাবে করার তা আমরা করবো। আর সেই আন্দোনের মধ্যে দিয়ে খালেদা জিয়া মুক্তি লাভ করবেন। ’
বিএনপির সিনিয়র নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, শারীরিকভাবে দূর্বল থাকলেও খালেদা জিয়া মানসিকভাবে সবল। আর তিনি মাথা নত করার ব্যক্তি নন। হয়তো বা আজকে প্রধানমন্ত্রীসহ যারা নানা ছলচাতুরির মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মৃত্যু জেলখানায় করাতে চান- আমি জানি না, আল্লাহ ভাগ্যে কী রেখেছেন। আল্লাহ যদি তার মৃত্যু জেলখানায় রাখেন তাহলে খালেদা জিয়ার ওজন বাড়বে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কয়েকজনের বক্তব্যে দেখলাম। সেই কথাতে বোঝা যায়, আদালত কতটা স্বাধীন। প্রতিদিন কত মামলায় রায় হয়। কিন্তু খালেদা জিয়ার মামলায় রায় হয় না!
ক্ষসতাসীন দলের নেতাদের উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর বলেন, বর্তমান রাজনীতি নাই, আছে শুধু গুজব। আর দুর্নীতির অনুসন্ধান অনেক খোঁজছেন। কিন্তু যারা করছেন, তারা কতটা দুর্নীতির ঊর্ধ্বে তা জনগণের প্রশ্ন। যে দেশের প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি লালন করেন ও প্রশ্রয় দেন- সে দেশের ডিপার্টমেন্টে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হলে তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কতটা সক্রিয় হতে পারবে? দুই-একটা টোকাই এর গল্প-উপন্যাসের মতো নাটক তৈরি করে কিছু সময়ের জন্য চমক সৃষ্টি করা যায়। প্রকৃত অর্থে দুর্নীতি থেকে দেশকে রক্ষা করা যায় না।
তিনি বলেন, আজকে পত্রিকায় দেখলাম, দেশে ৭৬ হাজার কোটিপতি! এটা শুধু ব্যাংক হিসাবে গচ্ছিত টাকার হিসাব অনুযায়ী। আর এই কোটিপতি প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণে হয়েছে। যত টাকা বিদেশে গেছে, তাদের হিসাব হলে কোটিপতির সংখ্যা কত? আর এই কোটিপতিদের যদি তালিকা প্রকাশ হয় তাহলে আওয়ামী লীগ করে না, এমন কোন কোটিপতি পাবেন না! সুতরাং সাধারণ মানুষ নিঃস্ব হয়ে গেছে।
‘আজ দেশের প্রতিটি মানুষ এবং ক্ষমতাসীনেরাও মারাত্মক আতঙ্ক ও গুজবের মধ্যে রয়েছে। কারণ গুজব কখনও কখনও মানুষকে আশান্বিত করে। আবার কখনও আতঙ্কিত করে। ’
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর শিকদারের সভাপতিত্বে সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ছড়াকার আবু সালেহ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৯
এমএইচ/এমএ