তিনি বলেছেন, ‘আমি সাক্ষী, এই নির্বাচনে আমিও নির্বাচিত হয়েছি। আমি সাক্ষী দিয়ে বলছি, আমি জনগণ, সেই জনগণ, তারা ভোট দিতে পারে নাই।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে বরিশাল নগরের অশ্বিনী কুমার হলে ওয়াকার্স পার্টির বরিশাল জেলা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেনন একথা বলেন।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন মানেই গণতন্ত্র হরণ নয়, উন্নয়ন মানেই ভিন্নমতের সংকোচন নয়। উন্নয়ন মানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ নয়। উন্নয়ন মানে গণতন্ত্রের স্পেস কমিয়ে দেওয়া নয়।
তিনি অভিযোগ করেন, সরকারের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে দেশে লুণ্ঠন-দুর্নীতি মহামারি আকার ধারণ করেছে। একদিকে সরকার উন্নয়ন করছে, অন্যদিকে সরকারের আশপাশের লোকজন দুর্নীতির মাধ্যমে হাজারো কোটি টাকা লুফে নিচ্ছে। এতে করে সরকারের উন্নয়ন ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের সুফল পাচ্ছে না দেশের মানুষ।
‘ক্যাসিনো পরিচালনাকারীরা অসৎ উদ্দেশ্যে দলে অনুপ্রবেশ করে উল্লেখ করে রাশেদ খান মেনন বলেন, ক্যাসিনোচালকরা শত শত কোটি টাকা কামাই করে ও খেলাপি ঋণের টাকা বিদেশে পাঠিয়ে সেকেন্ড হোম বানিয়েছে। দেশের কোটি কোটি টাকা তারা বিদেশে পাচার করছে। এর সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছে, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
সম্মেলনে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। ছবি: বাংলানিউজ
দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে মেনন বলেন, এতিমের টাকা মেরে দেওয়ার জন্য (বিএনপি প্রধান) খালেদা জিয়ার জেল হয়েছে, টাকা পাচার করার অভিযোগে তার ছেলে (বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন) তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, এখন যারা দুর্নীতি করছে তাদের বিচার কবে করা হবে?
ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে উদ্দেশ্য করে মেনন বলেন, তিনি বলেছিলেন বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে ঘর করবেন না। কিন্তু এখন তিনি বিএনপি-জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট গড়ে তুলেছেন। এর আগেও তিনি এমনটা করেছেন। কিন্তু আন্দোলন শুরু করে তিনি বিদেশে চলে গিয়েছিলেন।
‘বরিশাল আজ অন্য সব জেলার চেয়ে অবহেলিত। এখানে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে আছে। উপযুক্ত কর্মকর্তা না থাকায় আজ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত হয়ে করা হয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।
নজরুল ইসলাম নীলুর সভাপতিত্বে আয়োজিত জেলা সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন আনিছুর রহমান মল্লিক।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন- জেলা ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. টিপু সুলতান, শান্তি দাস, অধ্যাপক বিশ্বজিৎ বাড়ৈ, শাহজাহান তালুকদার, ফাইজুল হক বারী, এস এম জাকির হোসেন প্রমুখ।
এর আগে বেলা ১১টায় নগরের অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে জেলা সম্মেলন কার্যক্রমের সূচনা করা হয়।
পরে জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা লাল পতাকা নিয়ে নগরে র্যালি বের করে। এটি নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে এসে শেষ হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৯
এমএস/এসএ/এইচএ/