জেলার নতুন নেতৃত্বে আসেন সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন মুখ অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান। মহানগরের সভাপতি পদে মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক পদে অধ্যাপক জাকির হোসেনকে মনোনীত করা হয়।
গত ৫ ডিসেম্বর সিলেট আলীয়া মাদরাসা মাঠে সম্মেলন ও কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জেলার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তাকে দায়িত্ব দেন। পুরনোদের পেছনে ফেলে নেতৃত্বে টপকে এসে চমক দেখান এই তরুণ নেতা।
নেতৃত্বে আসার পর বিতর্কে ঝুলে থাকা সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা গোলাপগঞ্জ আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করে দিয়ে প্রশংসা কুড়ান তিনি।
সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার পর আগামীর পথচলার পরিকল্পনা নিয়ে বাংলানিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান বলেন, ১৯৮৫-৮৬ সালে নগরের এইডেড স্কুল থেকে আমার ছাত্র রাজনীতির পথচলা শুরু। ১৯৯১ সালে সম্মেলনে শহর ছাত্রলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হই। ১৯৯৩ সালে কাউন্সিলে ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক হই। ১৯৯৭ সালে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, ২০০৩ সালে জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক পদে আসি। এরপর ২০১১ সালে জেলা আ. লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হলে যুগ্ম সম্পাদক হই।
তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ। অথচ স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও সিলেট আওয়ামী লীগের স্থায়ী ঠিকানা হয়নি। এখনো অস্থায়ী কার্যালয়ে চলছে দলের কার্যক্রম। এ জন্য প্রথম কাজ হবে দলকে স্থায়ী ঠিকানায় নিয়ে যাওয়া। খোদ আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন দলের অফিস করতে, তিনি টাকা দেবেন। স্থায়ী অফিস হলে নেতাকর্মীরা একই ছাদের নিচে এসে জড়ো হবেন। এতে সিলেট আওয়ামী লীগে গ্রুপিং কোন্দল থাকবে না।
এছাড়া আগামী বছর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন ও স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি সফল করা তার সামনে নেতৃত্বের নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি নেতাকর্মীদের শৃঙ্খলার মধ্যে রাখার জন্য কাজ করবেন।
সিলেট আওয়ামী লীগে নিজের বলয় তৈরির বিষয়ে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, নেত্রী আমাকে যে চেয়ারে বসিয়েছে। এখান থেকে গ্রুপ করার কোনো সুযোগ নেই। আমার কোনো গ্রুপও নেই। আমি কোনো গ্রুপের নেতা নয়। আমি সবার জন্য সমান। সবাইকে নিয়ে সুন্দর আওয়ামী লীগ উপহার দিতে চাই।
নাসির উদ্দিন বলেন, সিলেট চেম্বারের নির্বাচনের দায়িত্বে ছিলাম। নানা চাপ সত্ত্বেও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করেছি, দেখেছেন নিশ্চই। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও একইরকম নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবো। আমি সিলেটের কয়েকটি উপজেলার গত কাউন্সিলের দায়িত্বে ছিলাম। কোথাও কিন্তু আমি কোনো প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করিনি। সব নিরপেক্ষভাবে করেছি।
বিগত দিনে জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের ব্যবসায়ী আঁতাত থাকার অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, বিগত দিনেও আমি ক্লিন ইমেজ নিয়ে চলেছি। ব্যবসার জন্য দলকে বিক্রি করে সম্প্রীতিতে কখনোই যাবো না। সবাইকে স্বাধীনতার পক্ষের দল আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করার আহ্বান জানাবেন তিনি।
তৃণমূল নেতাকর্মীদের উদ্দেশে অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান বলেন, বিগত দিনে যারা দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন, সংগঠনে তারাই বেশি অগ্রাধিকার পাবেন।
সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার কাঁকরদিয়া গ্রামের এই কৃতি সন্তান নাসির উদ্দিন আইন পেশাও যুক্ত রয়েছেন। নিজ নির্বাচনী এলাকা সিলেট-৬ আসনে নির্বাচন করার ভবিষ্যত পরিকল্পনা আছে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমার কাজ দল সাজানো, নির্বাচন করা নয়। তবে এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি যতদিন নির্বাচন করবেন, ততদিন প্রার্থী হবো না।
জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার বিষয়ে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সম্মেলনের প্রভাবে ডিসেম্বর মাস চলে যাবে। জানুয়ারি মাসের দিকে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৯
এনইউ/এজে