ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

খালেদার মুক্তি: অনশনে রিজভীর মৃত্যু কি মনে রাখবে দল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১০ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২০
খালেদার মুক্তি: অনশনে রিজভীর মৃত্যু কি মনে রাখবে দল

নারায়ণগঞ্জ: দীর্ঘ ২ বছর ১ মাস ১৭ দিন (৭৭৬ দিন) কারা হেফাজত থেকে বুধবার (২৫ মার্চ) দুই শর্তে সাজা ৬ মাসের জন্য স্থগিত করে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে। কিন্তু খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য যখন দলীয় নেতাকর্মীরা আন্দোলন-সংগ্রামে ব্যর্থ। আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যর্থ দলের আইনজীবীরা। ঠিক তখন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আমরণ অনশন করতে গিয়ে মারা যান দল পাগল রিজভী হাওলাদার।

রিজভীর এ মৃত্যুর সংবাদ খালেদা জিয়া পাবেন কিনা বা তার এই ত্যাগ দল অথবা জিয়া পরিবার স্মরণ রাখবে কিনা সেটি প্রশ্নই তুলেছেন অনেকে। এ রিজভী হাওলাদার নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা হলেও তিনি নিয়মিত বিএনপির নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে দলের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিতেন।

খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর নিজে না খেয়ে দিনের পর দিন তিনি খালেদা জিয়ার জন্য খাবার ও ফল নিয়ে নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগারের বাইরে অবস্থান করেছেন। একদিনও পুলিশ তাকে নিরাপত্তা ব্যারিকেডের আশেপাশে থাকতে দেয়নি। কিন্তু রিজভী হাল ছাড়েননি। সর্বশেষ নিজে কাফনের কাপড় পড়ে দলীয় কার্যালয়ের নিচে আমরণ অনশনে বসেন। সেখান ঘোষণা দেন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া না হলে অনশন করতে করতে তিনি খালেদা জিয়ার জন্য জীবন দেবেন। কিন্তু আন্দোলন থেকে পিছু হটবেন না। ঠিক তাই করেছেন। অনশনরত অবস্থায় ২৩ নভেম্বর দিনগত রাতে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের প্রধান ফটকের বাইরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।

রিজভী হাওলাদারের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফলের ছোট্টকান্দা গ্রামে। সে আজহার হাওলাদারের ছেলে। তবে তিনি ছোটবেলা থেকেই নারায়ণগঞ্জের কুতুবপুরে বসবাস করতেন। প্রায় ১ যুগের বেশি সময় ধরে নিয়মিত নারায়ণগঞ্জ থেকে তিনি দলীয় কার্যালয়ে আসতেন শুধু দল ও জিয়া পরিবারকে ভালোবেসে।

ছাত্রদলের সাবেক দফতর সম্পাদক আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দি হওয়ার পর থেকেই তিনি নিয়মিত নিজে না খেয়ে ম্যাডামের জন্য খাবার নিয়ে কারাগার গেটে দাঁড়িয়ে থাকতেন। কান্না করতেন। সবশেষ তিনি ম্যাডামের মুক্তির দাবিতে আমরণ অনশনে অসুস্থ পড়লে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থা কিছুটা গুরুত্বর মনে হলে চিকিসকরা তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে রেফার্ড করেন। কিন্তু ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে পড়ে যায় এবং সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ওই রাত দেড়টায় দলীয় কার্যালয়ের সামনেই তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি জানান, সন্ধ্যা ৭ টার দিকেও কার্যালয়ের গেটে তার সঙ্গে আমার শেষ কথা হয়েছে। তখন রিজভী আমাকে বলছিলেন ম্যাডামের জন্য কোনো নেতায় কিছু করলো না। আমার নেত্রীকে জেলে রেখে নেতারা মেরে ফেলবে। এভাবে হয় না। সবাই মুখে মুখে বলে কিন্তু নেত্রীর জন্য আসলে কাউকেই কিছু করতে দেখিনি। সবাই নিজের কথা ভাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২০
ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।