শনিবার (৯ মে) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গোটা দেশবাসী গভীর বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, গত কয়েকদিন ধরে দেশের কয়েক জায়গায় বিভিন্ন সামাজিক গণমাধ্যমে সরকারের করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার অব্যবস্থাপনা ও ব্যর্থতার ওপর লেখালেখি করার কারণে বেশ কয়েকজনকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নতুন করে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘দেশে একটি কার্য্যকরী মানহানি আইন থাকা সত্ত্বেও নির্যাতন ও হয়রানির উদ্দেশে ডিজিটাল আইনকেই বার বার ব্যবহার করছে সরকার। মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে পেছনে হাতমোড়া অবস্থায় হ্যান্ডকাফ পড়া সাংবাদিকের ছবিসহ সংবাদ, ডিজিটাল আইনকে সরকার কীভাবে সাংবাদিক ও সাধারণ নাগরিকের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে চলছে তার একটি উৎকৃষ্ট প্রমাণ। গণতান্ত্রিক অধিকারতো দূরে থাকুক মানুষ তার কষ্টের কথাও যাতে ভার্চুয়াল জগতে প্রকাশ করতে না পারে তার জন্য একের পর এক পরিপত্র জারি করে চলেছে সরকার। ’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বিটিআরসির মতো একটি নিরপেক্ষ রাষ্টীয় প্রতিষ্ঠানকে পরিণত করেছে ডিজিটাল জগতে সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার প্রধান পুলিশি প্রতিষ্ঠানে। বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলসমূহই নয়, দেশের সব মানবাধিকার সংগঠন ও সংবাদপত্র সম্পাদকদের সন্মিলিত সংগঠন ওই গণবিরোধী আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের হরদম গ্রেফতার করা হচ্ছে ও আতঙ্কের মধ্যে রাখা হয়েছে। অথচ ত্রাণের চাল ও গম চোরেরা নিরাপদে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ’
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতারকৃত বন্দিদের জামিন পাওয়ার অধিকারসহ আইনের আশ্রয় লাভের মতো মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। শিল্প কারখানা খুলে দেওয়া হচ্ছে, মার্কেট খুলে দেওয়া হচ্ছে, মসজিদ মন্দির খুলে দেওয়া হচ্ছে অথচ দমন, পীড়ন, হামলা, মামলা করে জনগণের কণ্ঠরুদ্ধ করার নৈরাজ্যবাদীতার বিরুদ্ধে মানুষের আইনের আশ্রয় লাভের অবলম্বন আদালত দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ করে রাখা হয়েছিল, যা এখন কেবল ভার্চুয়াল আদালত হিসেবে চালু করার প্রক্রিয়ায় আছে ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতারকৃত সব ‘বিবেকের বন্দি’ বা ‘প্রিজনার্স অব কনসায়েনস’ সহ সব রাজনৈতিক বন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আদালত পুরোপুরি স্বাভাবিকভাবে না খোলা পর্যন্ত হত্যা-ধর্ষণসহ জঘণ্যতম অপরাধ ছাড়া সব প্রকার গ্রেফতার বন্ধ রাখতে হবে। অথবা বিকল্প হিসেবে গ্রেফতারকৃতদের আদালত খোলার পর আত্মসমর্পণের শর্তে মুচলেকা নিয়ে মুক্তি দিতে হবে। কারাগারে বন্দি লঘু অপরাধে ও রাজনৈতিক মামলায় আটককৃতদেরসহ বয়ষ্ক ও নারী বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে । সব কারাগারের কর্মকর্তা ও কারারক্ষীদের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে। চিহ্নিতদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে তাদের কারণে কারা অভ্যন্তরে করোনা অনুপ্রবেশ ও সংক্রমণ না ঘটে। স্বাস্থ্য নিরাপত্তা কারাবন্দিদেরও মৌলিক অধিকার। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৬ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০২০
এমএইচ/আরবি/