সোমবার (২৫ মে) পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতের পর এ মন্তব্য করেন তিনি।
ফখরুল বলেন, করোনা মোকাবিলায় সরকারের তরফ থেকে যে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে আমাদের কাছে মনে হয়েছে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না, সমন্বয় ছিল না এবং এখনও নেই।
‘করোনা ভাইরাসকে ন্যূনতম প্রতিরোধের একটা কাছাকাছি আনার চেষ্টা করা থেকেও তারা (সরকার) ব্যর্থ হয়েছে। আমরা এ কথা বলি না যে, এটা তারা পুরোটাই পারবেন। কারণ পুরোটা পারা সম্ভব নয়, নতুন একটা জিনিস। কিন্তু যে ইচ্ছা, প্রচেষ্টা, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে বিশেষ করে বিশেষজ্ঞ যারা তাদের সঙ্গে নিয়ে এইটাকে মোকাবিলা করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। ’
সরকারের ব্যর্থতার কারণে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলেও মন্তব্য করেন ফখরুল।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, কয়েকবার বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কারণে সারাদেশেই মানুষ ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে এবার ঈদের আগে এবং তারও আগে গার্মেন্টসসহ ছুটি- সবমিলিয়ে এখন সারাদেশের মানুষই করোনাতে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন সংখ্যা বাড়ছে এবং বাড়ার কারণটা হচ্ছে যে, পরীক্ষা হচ্ছে বেশি সংক্রমিত সংখ্যাও সেজন্য বাড়ছে।
বেসরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা হচ্ছে না মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কতোটা ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে দেখুন- এখন যারা দায়িত্বপূর্ণ লোক আছেন, গুরুত্বপূর্ণ লোক আছেন তারা কিন্তু অন্য হাসপাতালগুলোতে যেগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে করোনা ভাইরাসের হাসপাতাল হিসেবে। সেখানে তারা যাচ্ছেন না। তারা যাচ্ছেন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে। আমরা মনে করি যে, এটা প্রমাণ করে সিভিল হেলথ ব্যবস্থা অর্থাৎ বেসামরিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। যার কারণে কারো আস্থা সেখানে থাকছে না।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসে লকডাউন করা হয়নি। কিন্তু ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার মধ্য দিয়ে মানুষ আসলে সাধারাণ ছুটি ভোগ করছে আমরা যা দেখতে পারছি চতুর্দিকে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা লক্ষ্য করেছি যে, সরকার এ বিষয়টাতে যে ধরনের গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন ছিল তা দিতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।
‘কোথাও কোনো দায়িত্বের লেশ আমরা দেখতে পারছি না, সমন্বয় দেখতে পারছি না। একটা যে সেন্স অব রেসপনসেভিলিটি সেটা দেখতে পারছি না। আপনি পুরোটাই পারবেন- সেটা সম্ভব না এখন। কিন্তু আপনি করার চেষ্টা করছেন আন্তরিকভাবে সেটা ভিজিবল হতে হবে-সেটাই আমরা দেখছি না। ’
সমগ্র দেশের মানুষ সুস্থ থাকুক এবং তারা করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকুক- এ কামনাও করেন ফখরুল
সকাল ১১টার দিকে মহাসচিব দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে শেরে বাংলানগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর প্রাঙ্গণে যান। তারা কবরের সামনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়িয়ে ফাতেহা পাঠ করে প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন।
খালেদা জিয়ার প্রতি অবিচার করা হয়েছে দাবি করে ফখরুল বলেন, আমরা এসেছিলাম আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করতে। প্রতিবছর দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে নিয়েই এখানে আমরা আসি জিয়ারত করতে। কিন্তু আপনারা জানেন, তিনি অসুস্থ। তার পক্ষে সম্ভব নয় এখানে আসা।
‘যদিও মাত্র ছয় মাসের জন্য তার সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি যে, এটা তার প্রতি সম্পূর্ণ অবিচার করা হয়েছে, ন্যায় বিচার করা হয়নি। তাকে সম্পূর্ণভাবে মুক্তি দেওয়া উচিত ছিল। বিচারেও তার জামিন পাওয়া উচিত ছিল। সেই জামিনও বর্তমান ব্যবস্থায় তিনি পাননি। ’
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখন কেমন জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ইনশাল্লাহ তিনি যেমন ছিলেন তার থেকে খারাপ হননি, স্থিতিশীল আছেন।
করোনা পরিস্থিতিতে কারাবন্দি রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিও জানান ফখরুল।
এসময় দলের মহাসচিব ছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২০
এমএইচ/আরবি/