ঢাকা: রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, পাটকলগুলোর আধুনিকায়ন এবং পাটকে জাতীয় ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।
বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা পিএস-১ এর কাছে স্মারকলিপিটি দেওয়া হয়।
পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউসের ই-মেইলেও স্মারকলিপিটি পাঠানো হয়। দুপুরে ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানো হয়।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন এবং সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বন্ধ করার সরকারের এ আকস্মিক সিদ্ধান্ত কেবল পাটশিল্পের জন্যই নয়, সমগ্র পাটখাতের জন্য আত্মঘাতী। রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে দেওয়ার ফলে বাংলাদেশের পাটজাত দ্রব্য যে আন্তর্জাতিক বাজার হারাবে তা আর সহজে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। অন্যদিকে, পাটকলের জন্য যে অভিজ্ঞ শ্রমিক গড়ে উঠেছিল তারাও হারিয়ে যাবে, তাদের ফিরে পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
স্মারকলিপিতে এরশাদ শাসনামলে কিছু পাটকল ব্যক্তি মালিকানায় তুলে দেওয়া এবং বিশেষ করে খালেদা জিয়ার শাসনে পাটখাত সংস্কারের নামে পাটশিল্প বন্ধ করে দেওয়ার বিশ্বব্যাংকের চক্রান্তের বিরোধিতা এবং ৯৬-২০০১ ও ২০০৮ নির্বাচন পরবর্তী সরকারের আমলে বন্ধ পাটকলগুলো খুলে দেওয়া ও সর্বোপরি পাটশিল্প বহুমুখীকরণের উদ্যোগ সম্পর্কে সেই সময়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর ভুমিকা ও তার সরকারের সুদৃঢ় অবস্থানের সম্পূর্ণ বিপরীত বলে উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে এ যাবত অনুষ্ঠিত প্রতিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ও ১৪ দলের ঘোষিত অভিন্ন ন্যূনতম ২৩ দফা কর্মসূচির লঙ্ঘন বলে অভিহিত করা হয়।
স্মারকলিপিতে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতে পাটকলগুলো সংস্কার ও আধুনিকায়নের জন্য ২০১৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) সর্বসম্মতভাবে সরকারকে যে প্রস্তাব দিয়েছিল তা বিবেচনা করে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া, বিজেএমসি বিলোপ ও মিলগুলো স্বয়ংসম্পূর্ণ ইউনিট করা, লাভ-ক্ষতির ভিত্তিতে পরিচালনার ব্যবস্থা করা, প্রধানমন্ত্রী অনুমোদিত ‘ডাইভারসিভাইড জুট প্রডাক্ট’ প্রকল্প বাস্তবায়িত করা, সরকারি ও বেসরকারি পাটকল উভয়ের পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে বিশেষ প্রণোদনা, পাটচাষের এলাকা বাড়ানো, উন্নতমানের পাটচাষের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া, পাটকলগুলো আধুনিকায়নের সময় শ্রমিকদের লে-অফ সুবিধা দেওয়া, প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারের এযাবতকালের প্রতিশ্রুত অবস্থান অনুযায়ী রাষ্ট্রায়ত্ত বন্ধ পাটকলগুলো এসব সামগ্রিক পরিকল্পনার ভিত্তিতে খুলে দিয়ে আধুনিকায়ন করা, পাট ও পাটজাত পণ্যের বাজার সংরক্ষণ ও বিস্তৃতকরণে পাটশিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২০
আরকেআর/এফএম