ঢাকা: বিএনপির তৎকালীন সরকারকে অভিযুক্ত করার জন্য পরিকল্পিতভাবে ২১ আগস্টের ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শনিবার (২২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল আয়োজিত দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে তিনি এ দাবি করেন।
রিজভী বলেন, এ ঘটনা যে পরিকল্পিত তা বোঝা যায়। হঠাৎ করে পুলিশকে না জানিয়ে মুক্তাঙ্গণ থেকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে সমাবেশ নিয়ে যাওয়া হয়। এ পরিকল্পনা ছিল বিএনপি সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করা এবং ছলে-বলে-কৌশলে ক্ষমতায় এসে বিএনপি নেতাকে বিপর্যস্ত করা-অভিযুক্ত করা। বড় ধরনের দেশীয় ও বিদেশি চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের ফল হচ্ছে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা।
তিনি বলেন, আজকে আমরা এমন একটি অবিচারের রাজ্যে বাস করছি যেখানে চলছে ভয়ঙ্কর অবিচার। ন্যায় বিচার শুধু নিরুদ্দেশ নয়, ন্যায় বিচারের অর্থ কী এটা আগামীদিনের ছাত্ররা গবেষণা করার সুযোগ পাবেন। ন্যায় বিচার দূরের তারা। দূরের তারার মতো দেখতে হয় ওই যে দূরে যে তারা দেখা যাচ্ছে ওইটা মনে হয় ন্যায় বিচার।
রিজভী বলেন, শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আমাকে মেরে ফেলার অনেকবার চেষ্টা করা হয়েছে। ২১ আগস্ট হচ্ছে একটা বিরাট পরিকল্পনা। ভয়ঙ্কর আক্রমণের আগেও আমাকে অনেকবার আক্রমণ করা হয়েছে। কিন্তু এটি ছিল ভয়ঙ্কর আক্রমণ। এর কারণ আছে। উনি প্রধানমন্ত্রী একটু আধ্যাত্মিকভাবে বিষয়টা বলতে চেয়েছেন। নিশ্চয়ই কারণ একটা তো আছেই, যেটা আমরা বলেছি সেদিন এলোপাথাড়ি গ্রেনেড হামলা হয়েছে। সরকার যদি করে আর সরকার যদি শেখ হাসিনাকেই টার্গেট করে এলোপাথাড়ি হামলা হবে কেন? সেটাতো একেবারে টার্গেট করে প্রধান ব্যক্তিকে করতে পারতো। তাতো হয়নি, এলোপাথাড়ি হয়েছে। উনি যদি প্রধান টার্গেট থাকেন তাহলে উনি সেদিন নির্বিঘ্নে গাড়িতে উঠে গেলেন কীভাবে?
বিএনপির এ নেতা বলেন, সেদিন বোমা হামলার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বিচলিত হয়েছিলেন। তিনি সিএমএইচে আইভি রহমানসহ আরও যারা আহত হয়েছিলেন তাদের দেখতে গিয়েছিলেন, খোঁজ-খবর নিয়েছিলেন। সেখান থেকে গিয়েছিলেন সুধা সদনে। কিন্তু সেদিন তাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কেন ঢুকতে দিল না। আপনার ছাত্রলীগ, যুবলীগ শুধু ঢুকতে দেয়নি এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও তার নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আক্রমণ করেছে। এর কারণ কী? বিদেশে থেকে গোয়েন্দা বাহিনী আনা হলো তদন্ত করতে, তাদেরও কেন সহযোগিতা করলেন না?
সরকারের দুর্নীতির নানা চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা আজকে যদি আওয়ামী লীগকে একটা ঘর ধরি, সেই ঘরের ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে বের হয় পাপুল। তাদের স্যুটকেস থেকে বের হয় শাহেদ। তাদের আলমারি থেকে বের হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮০০ কোটি টাকা। সবকিছুই তো আওয়ামী লীগের ঘরের ভেতর থেকে বের হচ্ছে। ফরিদপুর ছাত্রলীগের সভাপতি যদি শত শত কোটি টাকা পাচার করতে পারে তাহলে আর কী থাকতে পারে?
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মাহতাবের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, বিএনপি নেতা আব্দুল খালেক, রফিকুল ইসলাম, আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, গোলাম সরোয়ার, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, অধ্যাপক সেলিম মিয়া প্রমুখ।
পরে দোয়া ও মিলাদ পরিচালনা করেন ওলামা দল নেতা কারী রফিকুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২০
এমএইচ/আরবি/