ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

শিশু ধর্ষণচেষ্টাকারী ছাত্রলীগ নেতাকে জুতাপেটা, দল থেকে বহিষ্কার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২০
শিশু ধর্ষণচেষ্টাকারী ছাত্রলীগ নেতাকে জুতাপেটা, দল থেকে বহিষ্কার

কুমিল্লা: কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে জেলা ছাত্রলীগ নেতা জয়নাল আবেদিন জয়কে গ্রাম্য সালিশি বৈঠকে জুতাপেটা করা হয়েছে। ঘটনার পর তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে জেলা ছাত্রলীগ থেকে।

জয়নাল আবেদিন জয় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। তিনিকুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে। এছাড়াও জয় নিজেকে কুমিল্লার স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকার উপজেলার সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন।

সোমবার (২৪ আগস্ট) বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়নের চেঙ্গাহাটা এলাকার চৌহমুনীতে ছাত্রলীগ নেতা জয়ের ফার্মেসির ভিতরে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনাটি ঘটে।

সালিশি বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজন ব্যক্তি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য রতন মেম্বার জানান, চেঙ্গাহাটা চৌহমুনীতে জয়ের একটি ফার্মেসি রয়েছে। পাশে আছে একটি চায়ের দোকান। দুপুরে মানুষের উপস্থিতি কম থাকায় চা দোকানির নয় বছরের শিশুটি বাবার দোকানে এলে ছাত্রলীগ নেতা জয় তার ফার্মেসিতে ডেকে নেয়। পরে ফার্মেসির পিছনের রুমে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে।

শিশুটি চিৎকার করলে অন্য দোকানিরা তাকে উদ্ধার করেন। পরে লালমাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান রকেট মজুমদারসহ বসে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। বৈঠকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা জয়নাল আবেদিন জয়কে জুতাপেটা করা হয়। সালিশ বৈঠকের বিচার মেনে নিয়েছে শিশুর পরিবার।

ধর্ষণের ঘটনায় লালমাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আয়াত উল্লাহ বলেন, জয় আমার কাছে ধর্ষণচেষ্টার কথা স্বীকার করলে তাকে সালিশি বৈঠকে জুতাপেটা করা হয়। যাদের অপকর্মের কারণে ছাত্রলীগ কিংবা আওয়ামী লীগ প্রশ্নবিদ্ধ হয়, এ ধরনের নেতাদের সংগঠনে মানায় না।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা জয়নাল আবেদিন জয় অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মেয়েটি আমার ফার্মেসিতে আসে। তবে আমি তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করিনি। পরে সালিশি বৈঠকে রকেট ভাই আমাকে ডেকে নিয়ে জুতাপেটা করবেন আগে থেকে বুঝতে পারিনি।

সালিশি বৈঠকের বিচারক মাহবুবুর রহমান রকেট বলেন, যৌন নিপীড়নের অভিযোগে এলাকাবাসী জয়কে আটক করে মারধর করেছে। আমার গ্রামের ছেলে হওয়ায় অভিভাবক হিসেবে জুতাপেটা করে তাকে ছাড়িয়ে এনেছি।

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন রুবেল বলেন, অপরাধ ব্যক্তির, দলের নয়। অভিযুক্ত জয়কে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি, সম্পাদক বরাবর আমরা আবেদন করেছি।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আইয়ুব বলেন, আমি বিষয়টি ফেসবুকে দেখেছি। তবে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।

এদিকে এ ঘটনার পর মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) কেন্দ্রীয় ছাত্রলেীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির পদ থেকে জয়নাল আবেদিন জয়কে বহিষ্কার করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২০
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।