ঢাকা: সীমান্তে হত্যার প্রতিবাদে সোমবার (২১ ডিসেম্বর) দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে দলীয় কার্যালয়গুলোতে কালো পতাকা উত্তোলন এবং নেতাকর্মীদের কালো ব্যাজ ধারণ ও কালো পোশাক পরিধান করার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
রোববার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রিজভী বলেন, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাহেবের মন্তব্য শুনে মনে পড়ছে মধ্যযুগের কবি আব্দুল হাকিম রচিত ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার দুটি লাইন, ‘যেসবে বঙ্গেতে জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী/ সেসবে কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি। ’
জানতে ইচ্ছে করছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল কালাম আব্দুল মোমেন কি স্বাধীন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, নাকি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রতিনিধি? বাংলাদেশের বিজয়ের মাসে বিজয়ের দিনেও সীমান্তে মানুষ হত্যা করা হয়! বিজয়ের মাসে, এমনকি বিজয় দিবসে সীমান্তে মানুষ মারা যাওয়ার পরও যে মন্ত্রীর কোনো বিকার নেই, এরা আত্মা বিক্রি করেছেন বলেই সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যায় বিএসএফ এর পক্ষে নির্লজ্জ সাফাই গাইছেন।
তিনি বলেন, গত ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী যখন ‘বন্ধনের সোনালি অধ্যায়’ রচনা করতে ভার্চ্যুয়াল আলোচনায় ব্যস্ত ছিলেন তখন লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়ন সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত বাংলাদেশী নিরীহ দরিদ্র যুবক জাহিদুল ইসলামের লাশ পড়েছিল কাঁটাতারের নিচে। সামিট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন নির্লজ্জভাবে বলেছেন, ‘সীমান্তে হত্যায় ভারত একতরফাভাবে দায়ী নয়। আমাদের কিছু দুষ্টু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে সীমান্তের ওপারে যায় এবং তাদের কাছে অস্ত্র থাকে। তখন ভারত বাধ্য হয়ে ভয়ে ওদের গুলি করে। ’
রিজভী বলেন, কিছুদিন আগে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছিলেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। কাঁটাতারের বেড়া কেটে গরু আনতে গিয়ে ইন্ডিয়ার গুলি খেয়ে মারা যায়, তার জন্য দায়-দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকার নেবে না।
রিজভী আরও বলেন, যারা প্রতিনিয়ত বাংলাদেশিদের পাখির মতো গুলি করে হত্যা করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তো দূরের কথা উল্টো পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে দেশের মানুষদের হত্যা করারই ন্যায্যতা দান করছে। এ দুই মন্ত্রীর বক্তব্য দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী। সুতরাং সীমান্তে হত্যার দায় বাংলাদেশ সরকারও এড়াতে পারে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২০
এমএইচ/আরআইএস