ঢাকা: নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ করে ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি এবং সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের দাবিকে উদ্দেশ্যমূলক বলে মনে করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ইসির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দেশকে অস্থিতিশীলতার পথে নিয়ে যাওয়ার এজেন্ডা বলে আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ।
সম্প্রতি দেশের ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিবৃতি দিয়েছেন এবং রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দিয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তারা ইসির বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি, বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচন পরিচালনায় ব্যর্থতার অভিযোগ এনেছেন। যদিও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে নির্বাচন পরিচালনায় ব্যর্থতার এই অভিযোগ অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল এ অভিযোগ করছে।
তবে দেশের এই ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিকের পক্ষ্য থেকে বিবৃতি দিয়ে উপস্থাপিত এই অভিযোগকে উদ্দেশ্যমূলক এবং নতুন কোনো এজেন্ডা বলে সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন। মানুষকে বিভ্রান্ত করে দেশকে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে এই বিবৃতি দেওয়া হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন। বিশিষ্ট নাগরিকদের এই অভিযোগ যুক্তিহীন এবং এর কোনো ভিত্তি নেই বলেও তারা অভিযোগ করেন।
নির্বাচন কমিশনকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করার চেষ্টা একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরেই চালিয়ে আসছে। বিগত নির্বাচনে জনগণ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিএনপি বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা প্রতিনিয়তই চালিয়ে আসছে বলেও আওযামী লীগ নেতারা জানান। ইসিকে নিয়ে নতুন করে বিশিষ্ট নাগরিকদের এই বিবৃতি সেই উদ্দেশ্যেরই প্রতিফলন বলে সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা অভিযোগ করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বিরোধীতা করা, একটি গোষ্ঠীর স্বভাব হয়ে দাঁড়িযেছে। তারা একটা অভিযোগ করলেই তো হবে না। তাদের এসব বক্তব্য যুক্তিহীন ও ভিত্তিহীন। বিএনপি এই নির্বাচন কমিশন নিয়ে কথায় কথায় অভিযোগ করে আসছে। নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করাই বিএনপির উদ্দেশ্য। কিন্তু বিশিষ্ট নাগরিকরা যে বিবৃতি দিলেন ২০০১ সালের নির্বাচনের পর কিন্তু তারা ওই নির্বাচনের অনিয়মের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। তখন তারা কোথায় ছিলেন? মানুষকে বিভ্রান্ত করে দেশকে একটা অস্থিতিশীল পথে নিয়ে যাওয়ার জন্যই এই অভিযোগ। ’
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেতা খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ‘যারা বিবৃতি দিয়েছেন তাদের সম্পর্কে দেশের মানুষ জানেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর এরা কি প্রতিবাদ করেছিলেন? করেনি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে এরা কি কখনও দাবি জানিয়েছিলেন? ২১ আগস্ট গ্রেনেড মামলার পর এরা কি কোনো বিবৃতি দিয়েছিলেন? এদের একটা এজেন্ডা আছে। এদের উদ্দেশ্য নির্বাচন কমিশন নয়, দেশকে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেতে এটা একটা নতুন এজেন্ডা। রাষ্ট্রপতি একজন বিচক্ষণ ব্যক্তি। তিনি অবশ্যই তার বিচক্ষণতা দিয়ে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন। ’
বাংলাদেশ সময়: ২১৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২০
এসকে/এমএইচএম