চট্টগ্রাম: প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব বাতিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
মুক্তিযুদ্ধের সময় জিয়াউর রহমানের ভূমিকা আসলে কী ছিল সেটি নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে তিনি (জিয়াউর রহমান) প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছিলেন। তার খেতাব বাতিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তো হয়নি এখনো। এটা নিয়ে জামুকাতে আলোচনা হয়েছে মাত্র।
শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরে নিজ বাসায় সমসাময়িক বিষয়ে ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
হাইকোর্টের নির্দেশ পেলে কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন আল জাজিরার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, হাইকোর্ট যদি কোনো আদেশ দেন এটি বন্ধ করার জন্য, সে ক্ষেত্রে হাইকোর্টের আদেশ আমাদের মানতে হবে।
ড. মাহমুদ বলেন, আমরা চাইলে আল জাজিরার সম্প্রচার আমাদের দেশে বন্ধ করতে পারতাম, অনেক দেশে বন্ধ করা হয়েছে, বন্ধ রয়েছে। এমনকি ভারতেও কিছুদিনের জন্য বন্ধ ছিল। এখনো ৬-৭টি দেশে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ আছে। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার যেহেতু গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে—তাই আমরা সেই উদ্যোগ নেইনি।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার যেমন দরকার, দায়িত্বশীলতারও প্রয়োজন রয়েছে। স্বাধীনতা মানে এই নয়—ভুল, মিথ্যা, পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অপরের স্বাধীনতা হরণকারী সংবাদ পরিবেশন করা। এটা কোনোভাবেই সমীচীন নয়। আল জাজিরার রিপোর্ট মিথ্যা-বানোয়াট, কিছু কাটপেস্ট করে রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়েছে। ব্যক্তিগত আক্রোশের বশঃবর্তী হয়ে এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতারা করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে অনেক অপপ্রচার চালিয়েছেন। তারা প্রথমে বলেছেন, সরকার ভ্যাকসিন সময়মতো আনতে পারবে না। যখন সময়মতো চলে আসলো তখন বললেন এটি নিলে কোনো কাজ হবে না। এই ভ্যাকসিন দিয়ে বিএনপি নেতাদের মেরে ফেলতে চাচ্ছেন—এ ধরনের কথাও বলেছেন তারা।
হাছান মাহমুদ বলেন, নানা ধরনের প্রশ্ন তুলে, দায়িত্বহীন অনেক কথা বলে শেষ পর্যন্ত বিএনপির অনেক নেতা করোনা ভ্যাকসিন নিয়েছেন। নেওয়ার পক্ষে কথাও বলেছেন। সেজন্য তাদের সাধুবাদ জানাই। কথায় আছে—গাধা জল ঘোলা করে খায়। করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে বিএনপির ভূমিকাও সেরকম হয়েছে।
বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি তো বিরোধী দল, তারা বিক্ষোভ করতেই পারে। কিন্তু চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনসহ অন্যান্য যেসমস্ত ইস্যুতে তারা বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে তা হাস্যকর।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কিংবা পার্শ্ববর্তী দেশে যে ধরনের স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয় সেই নিরিখে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে একটা ভালো নির্বাচন হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে কিন্তু কার্যত মাঠে ছিল না। ভোটের দিন তাদের কাউকে দেখা যায়নি।
তথ্যমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে বিএনপির মহাসচিব কি চট্টগ্রাম এসেছিলেন? তিনি কি নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছিলেন? একটা মিটিং করেছেন? অথচ তাদের তো প্রচারণা চালাতে কোনো অসুবিধা ছিল না।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২১
এমআর/টিসি/এমজেএফ