নারায়ণগঞ্জ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের জন্য কাজ করছেন উল্লেখ করে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, আল্লাহ দেখছেন জনগণ যাকে ভোট দিয়ে চেয়ারে বসিয়েছে তিনি নিজের জন্য নয়, জনগণের জন্য কাজ করছেন।
মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় ‘হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু’ ম্যুরালের উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন শামীম ওসমান।
তিনি বলেন, আমি চেষ্টা করছি নারায়ণগঞ্জে সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে কাজ করতে। কিন্তু কিছু কিছু মানুষ একসঙ্গে কাজ করতে চান না। আমরা ডাবল রেললাইন নিয়ে এসেছি। এই রেললাইন শহরের ভেতর ঢুকলে পুরো শহর অকেজো হয়ে যাবে। আমি রেলমন্ত্রীকে বলেছি এই রেললাইন চাষাঢ়া পর্যন্ত রাখলে ভালো হয়। তিনি প্রস্তাব দিতে বলেছেন। এখন প্রস্তাব দিতে গেলে আমাদের কেউ কেউ গিয়ে বলবে শামীম ওসমান রেললাইন চাষাঢ়া নিয়ে গেছে, আপনারা বন্দরের যারা আছেন আপনাদের চাষাঢ়ায় গিয়ে ট্রেনে চড়তে হবে। এই এপাড়-ওপাড়ের নোংরা রাজনীতি যারা করেন তারাই এ ধরনের ঘটনা ঘটাবে। শুধু হকারদের রাস্তায় মেরে যানজট কমানো যাবে না। আপনাকে পরিকল্পনা মোতাবেক কাজ করতে হবে।
শামীম ওসমান বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জে কোনো সম্পদ করিনি, জমি কিনিনি। কেউ যদি তা প্রমাণ করতে পারেন, এই মুহূর্তে রাজনীতি ছেড়ে চলে যাবো। সেলিম ওসমান যেভাবে দিচ্ছেন তার চেয়ে হাজার গুণে বড়লোক ব্যক্তিরাও সেভাবে দিচ্ছে না। তিনি দিচ্ছেন কারণ এটা সদকায়ে জারিয়া, এগুলি থেকে যাবে। চালাকি করে ওয়াকফের সম্পত্তি খেয়ে ফেলবো, ধর্মীয় সম্পত্তি খেয়ে ফেলবো—ওইটা থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, আমাকে অনেকে প্রশ্ন করেছেন আমি দাবি না করে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে ভিক্ষা চাইলাম কেন। আমি ভিক্ষা চেয়ে ছোট হইনি, বড় হয়েছি। উন্নয়ন ও জনগণের জন্য আমি এরকম আরও একশবার ভিক্ষা চাইতে পারি, এমনকি পায়েও ধরতে পারি। ডিএনডি প্রজেক্টের জন্য তৎকালীন পরিকল্পনামন্ত্রীর পা ধরতে গিয়েছিলাম। তিনি দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। সেটা হয়তো সাংবাদিক কিংবা আমার এলাকার মানুষ দেখেননি। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা ঠিকই দেখেছেন।
শামীম ওসমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসায় নারায়ণগঞ্জ সিক্ত। এ কারণে নারায়ণগঞ্জের মানুষও জাতির পিতার ঋণ শোধ করতে কৃপণতা করেনি। শুধু এই নারায়ণগঞ্জ শহরেই আমাদের পঞ্চাশ জন লোককে প্রাণ দিতে হয়েছে জাতির পিতার হত্যার বিচার ও গণতন্ত্র পাওয়ার জন্য। আমার গোণার বাইরেও অনেকে থাকতে পারে। এদের সবার দাফন-কাফনও আমরা গোরস্থানে করতে পারিনি। আমরা সবকিছু ধৈর্যের সাথে মেনে নিয়েছি। যদি জাতির জনকের কন্যা সবকিছু হারিয়ে ধৈর্য ধরতে পারেন আমরা কেন পারবো না?
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার ব্যক্তিগত স্বপ্নকে মূল্যায়ন করেননি। তিনি তার পিতার স্বপ্নকে মূল্যায়ন করেছেন এবং সেই স্বপ্ন ছিল দেশের গরিব-দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। যেখানে পৃথিবীর অন্যান্য ধনী দেশগুলো স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছে না সেখানে মুজিববর্ষে জাতির জনকের কন্যা মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিচ্ছেন। নারায়ণগঞ্জ সহ বাংলাদেশের প্রত্যেকটা গ্রামে তিনি ভূমিহীদের ঘর করে দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জে যদিও জায়গা পাওয়া যান না। তারপরও আমরা কাশিপুর, বক্তাবলী, গোগনগর এলাকায় যতটুকু জায়গা পাওয়া গেছে সেখানেই আমরা সহায়-সম্বলহীনদের বাড়িঘর নির্মাণ করে দিয়েছি। তিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন বাংলাদেশে যেন আর কোনো গৃহহীন মানুষ না থাকে।
দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শামীম ওসমান বলেন, ওনারা এই দেশের জন্য অনেক কিছু করেছেন। তিনি আমার দাদার বন্ধু ছিলেন। তার বাবা আমার চাচার বন্ধু ছিলেন। ওনারা এখানে ক্যান্সার রিসার্চ ইনস্টিটিউট ও নার্সিং ইনস্টিটিউট দুটোই করছেন। আমি তাদের পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২১
এমজেএফ