ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নতুন করে বিএনপির অঙ্গীকার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০২১
মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নতুন করে বিএনপির অঙ্গীকার

ঢাকা: স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীতে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নতুন করে অঙ্গীকারের কথা ব্যক্ত করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (১ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে লেকশোর হোটেলে স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী উপদযাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ অঙ্গীকারের কথা ব্যক্ত করেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, এ স্বাধীনতা কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়। এ স্বাধীনতা এ দেশে যারা সোনালী ফসল ফলায়, যারা পণ্য উৎপাদন করে, যারা শ্রম দিয়ে অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে তাদের সবার। প্রবাসী শ্রমিক ভাইয়ের, গার্মেন্টর্সে কর্মরত মা-বোনের, ক্ষেতে রৌদে পোঁড়া-বৃষ্টিতে ভেজা কৃষকের, ছাত্র-যুবক সব পেশাজীবীর।

আসুন এ পঞ্চাশ বছর পরে আমরা নতুন করে ১৯৭১ সালের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের শপথ নেই। যা আমাদের একটি উদার গণতান্ত্রিক, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে, এগি্য়ে যাবে অন্ধকার থেকে আলোর জগতে।

বিএনপি মহাসচিব বক্তব্যের শুরুতে জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রাম-স্বাধিকার আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শেখ মুজিবুর রহমানসহ রনাঙ্গনের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা-লাখো ভাই-মা-বোনের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

ফখরুল বলেন, এ স্বাধীনতা বাঙালির স্বপ্নের ফসল। এ স্বাধীনতা আমাদের দীর্ঘদিনের নিজেদের রাষ্ট্র নির্মাণ করার আকাঙ্ক্ষার ফসল, এ স্বাধীনতা আমাদের কৃষক-কৃষাণী, ছাত্র-ছাত্রী, পেশাজীবী-ব্যবসায়ীদের ঘামের ফসল, অনেক ত্যাগ-তিতীক্ষার কষ্টের আত্মবলীদানের মহান গৌরবের সম্পদ। একটি গণতান্ত্রিক সমাজ, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করার স্বপ্ন এ স্বাধীনতা।

আমরা যখন সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছি, শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের চক্রান্ত চলছে। বর্তমানে অনির্বাচিত কর্তৃত্ববাদী স্বৈরাচারী সরকার এ চক্রান্ত করছে।

দলের কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, পাঁচ শতাধিক গুম-খুন এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশি হামলা, লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ, গুলি, গ্রেফতার, কারাগারে নির্যাতনে সাবেক এমপি নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুর মৃত্যু, মিথ্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে কারাগারের কনডেম সেলে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম পিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা লুতফুজ্জামান বাবর, লেখক মুশতাক আহমেদ কারাগারে মৃত্যুবরণ প্রভৃতি বিষয়গুলো তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলোয়াত করা হয়। এর পরে জাতীয় সংগীত পরিবেশনা করেন দলের শিল্পীরা। এ সময়ে সবাই দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীতের প্রতি এবং একাত্তরের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি সন্মান প্রদর্শন করেন। লন্ডন থেকে স্কাইপের মাধ্যমে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন উজ্জ্বলের পরিচালনায় দলের শিল্পীরা দলীয় সংগীত, কোরিওগ্রাফির মাধ্যমে স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীর ‘থিম সং’ এবং শিল্পী রেখা সুফিয়ানা, ইথুন বাবু ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বেবী নাজনীন দেশাত্মবোধক গান পরিবেশ করেন।

অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জীবন ও কর্মের ওপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব আবদুস সালামের পরিচালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বিক্রম, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম (বীর প্রতীক) বক্তব্য দেন।

বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বরকত উল্লাহ বুলু, রুহুল আলম চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, উকিল আব্দুস সাত্তার, ভিপি জয়নাল আবেদীন, আবদুল কাইয়ুম, শাহিদা রফিক, আব্দুল কুদ্দুস, মামুন আহমেদ, সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, তাহসিনা রুশদীর লুনা, বিজন কান্তি সরকার, সুকোমল বড়ুয়া, এনামুল হক চৌধুরী, খন্দকার মুক্তাদির, মজিবুর রহমান সারোয়ার, মাহবুবউদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, খায়রুল কবির খোকন, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, আসাদুজ্জামান রিপন, ফজলুল হক মিলন, শামা ওবায়েদ, বিলকিস জাহান শিরিন, জহিরউদ্দিন স্বপন, নাজিম উদ্দিন আলম, শিরিন সুলতানা, নাসের রহমান, তাবিথ আউয়াল, ইশরাক হোসেন, খন্দকার মারুফ হোসেন। প্রচার ও মিডিয়া কমিটির শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, শহিদুল ইসলাম বাবুল, সেলিমুজ্জামান সেলিম, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, আমিরুল ইসলাম আলীম, মীর হেলালউদ্দিন, আতিকুর রহমান রুমন, শায়রুল কবির খান, মাহমুদা হাবিবাসহ দলের কেন্দ্রীয় ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

২০ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে মোস্তফা জামাল হায়দার, সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, রেদোয়ান আহমেদ, আহমেদ আবদুল কাদের, ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, খন্দকার লুতফুর রহমান, সাইফুউদ্দিন মনি, সাহাদাত হোসেন সেলিম, আজহারুল ইসলাম, সৈয়দ এহসানুল হুদা, আবু তাহের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, মুফতি মহিউদ্দিন ইকরাম, ফারুক রহমান, মোস্তা্ফিজুর রহমান মোস্তফা, ইকবাল হোসেনসহ শরিক দলের নেতারাও ছিলেন।

অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, তুরস্ক, জাপান,  জাতিসংঘ, ইউএসএইড, আন্তর্জাতিক রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০২১
এমএইচ/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।