ঢাকা: তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রেসক্লাবের সামনে কয়েকজন দাঁড়িয়ে বললেই আইন বাতিল করতে হবে তা কিন্তু নয়? বাংলাদেশতো কয়েকজন নাগরিকের না, বহু নাগরিক আছে। নাগরিক বলতে শুধু ওই কয়েকজন যারা বক্তৃতা করেছেন, যারা সব সময় সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন তাদের বোঝায় না।
বৃহস্পতিবার (০৪ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বুধবার (০৩ মার্চ) নাগরিক সমাবেশ থেকে একটি আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে ২৬ তারিখের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের বিষয়ে। এ বিষয়ে সরকারের মতামত জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ওনারা কয়েকজন নাগরিক মিলে এটা বলেছেন। বাংলাদেশতো কয়েকজন নাগরিক না, বহু নাগরিক আছে। নাগরিক বলতে শুধু ওই কয়েকজন যারা বক্তৃতা করেছেন, যারা সব সময় সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন তাদের বোঝায় না। বাংলাদেশে আরও বহু নাগরিক রয়েছে, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি আছে হাজার হাজার লাখ লাখ। কয়েকজন দাঁড়িয়ে প্রেসক্লাবের সামনে সব সময় সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন। তারা দাঁড়িয়ে বললেই সেটি করতে হবে তা কিন্তু নয়।
তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সকল মানুষের নিরাপত্তার জন্য করা হয়েছে। যখন এই ডিজিটাল বিষয়টা ছিল না তখন এই আইনের প্রয়োজনও ছিল না। যখন ডিজিটাল বিষয়টি এসেছে তখন ডিজিটাল নিরাপত্তার বিষয়টি এসেছে। এ ধরনের আইন ভারত, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুরসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে আছে। এ আইনের যাতে অপপ্রয়োগ না হয় সে বিষয়ে আমরা সতর্ক আছি এবং সতর্ক থাকবো।
‘কোনো আইনের বলে যদি কেউ গ্রেফতার হয় বা কারাগারে তিনি যদি কোনো কারণে মৃত্যু বরণ করেন, সেটা যদি স্বাভাবিক বা অন্য কোনো কারণে মৃত্যু হয়, তাহলে সে আইন যদি বাতিল করতে হয় তবে বাংলাদেশের সকল আইন বাতিল করার কথা আসে। এছাড়া অন্যান্য আইনে দেশে গ্রেফতার হয়, কারাগারে মৃত্যু বরণ করে তাহলে সে সমস্ত আইনও বাতিল করতে হবে। ’
জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথমতো জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সময় সেক্টর কমান্ডার ছিলেন বটে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ভূমিকা রহস্যজনক ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধাকে কারো বাড়িতে এক গ্লাস পানি, ভাত খওয়ালে সে বাড়ির ওপর নির্যাতন হয়েছে। কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বাড়িতে আশ্রয় দিলে পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকার আলবদররা জানতে পারলে সে বাড়ির লোকদের ধরে নিয়ে গেছে হত্যাও করেছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় জিয়াউর রহমান একটি সেক্টরের কমান্ডার। আর উনার স্ত্রী ও পুত্ররা একেবারে নতুন বউয়ের আদরে পাকিস্তানিদের ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় পেলেন। এটা কীভাবে সম্ভব। দ্বিতীয়ত মুক্তিযুদ্ধের সময় তাকে (জিয়াউর রহমান) ব্রিগেডিয়ার বেগ চিঠি লিখেছেন তার কর্মকান্ডে পাকিস্তান খুশি। এটি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন বিষয়। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়া, সমস্ত ঘটনা প্রবাহ সাক্ষ্য দেয় মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে শুরু করে পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমানের কর্মকান্ড সাক্ষ্য দেয় যে তিনি আসলে মুক্তিযুদ্ধের আড়ালে পাকিস্তানিদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন। সে কারণেই তার খেতাব বাতিলের প্রশ্নটি এসেছে। তবে খেতাব বাতিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০২১
জিসিজি/এইচএডি