ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

হেফাজতের সঙ্গে সমঝোতায় যাবে না সরকার

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২১
হেফাজতের সঙ্গে সমঝোতায় যাবে না সরকার

ঢাকা: সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের নেতারা সাক্ষাৎ করলেও সংগঠনটির সঙ্গে কোনো সমঝোতায় যাবে না সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের জন্য গ্রেফতার অভিযান ও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া অব্যাহত থাকবে।

এ ব্যাপারে সরকার ও আওয়ামী লীগ কঠোর অবস্থানেই রয়েছে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। তাদের অনেক ছাড় দেওয়া হয়েছে। সবাইকে আইনের আওতায় আসতে হবে। এটা একটা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র, বৈধ সরকার ক্ষমতায়। সেখানে রাষ্ট্রীয় সম্পদে আগুন, ভাঙচুর ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালানো সহ্য করা হবে না। তালেবানি কায়দা, পাকিস্তানি কায়দা এ দেশে চলবে না। যুদ্ধাপরাধীদের যেভাবে বিচার হয়েছে, তাদেরও সেইভাবে বিচার হবে।

গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের বিরোধিতা করে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি থেকে সরকারি অফিসসহ বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ, ব্যাপক সহিংসতা ও ধ্বাংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালানো হয়। এই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই প্রেক্ষাপটে সোমবার (১৯ এপ্রিল) রাতে হেফাজতের কয়েকজন নেতা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে তার বাসায় দেখা করেন। তবে সরকারের মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, এই সাক্ষাৎ অপরাধীদের গ্রেফতার অভিযানের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না।

সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক নেতারা জানান, এর আগে তাদেরকে অনেক ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা যেভাবে সরকারি অফিস, রাষ্ট্রীয় সম্পদে আগুন দিয়েছে, স্বাধীনতা ও সংবিধানের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে, সেই অপরাধে তাদেরকে আইনের আওতায় আসতেই হবে। সরকারের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত থাকবে।

ধ্বংসাত্মক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হওয়ায় হেফাজত এখন সমঝোতার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে মনে করেন সরকারের ওই মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতারা।  

সরকারের ওই মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের মতে, হেফাজত যে অপরাধ করেছে, এটা তাদের নেতারা বুঝতে পেরে এখন গ্রেফতার বন্ধের দাবি জানাচ্ছেন। যারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে, তাদের সঙ্গে কোনো আপস বা ছাড় দেওয়া হবে না বলে সরকার ও আওয়ামী লীগের ওই নীতিনির্ধারকরা জানান। তারা যে অপরাধ করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে সরকারের ব্যবস্থা যে সঠিক, এটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে হেফাজত নেতারা সাক্ষতের মধ্য দিয়েই স্পষ্ট করেছেন।

এ বিষয়ে জনতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বাংলানিউজকে বলেন, যারা ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালিয়েছে, দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছে, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। তাদের সঙ্গে কোনো সমঝোতা হতে পারে না। তারা স্বাধীনতা, সংবিধানে বিশ্বাস করে না, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত মানে না। তারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে। তাদের ব্যাপারে সরকার কঠোর অবস্থানে, আওয়ামী লীগও কঠোর অবস্থানে। তাদের সঙ্গে কোনো আপস নেই। এদের অপরাধের কঠোর শাস্তি হবে, এটাই সরকার করবে।  

এ বিষয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, সরকারের দায়িত্ব দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষা করা। যারা দেশবিরোধী, সন্ত্রাসী তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। তাদের সঙ্গে আপসের কোনো বিষয় নেই। হেফাজতের সাবেক আমির আহমদ শফি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাদের দাবি অনুযায়ী কওমী মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতি দিয়েছে সরকার। আহমদ শফি বলেছিলেন, শেখ হাসিনার কাছে ইসলাম নিরাপদ। তাদের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ইসলামের দিক নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তাদের নেতারাও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলেছেন, তারাও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড সমর্থন করেন না। তার মানে সরকার যে সঠিক কাজ করছে এটা তারাও অনুধাবন করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২১
এসকে/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।