ঢাকা: শেখ হাসিনার দুঃশাসন ৭২-৭৫ সালের দুঃশাসনকেও ছাড়িয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায়।
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব ভিআইপি লাউঞ্জে ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলনের ৫৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ ন্যাপ আয়োজিত ‘কাগমারী সম্মেলন: বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মওলানা ভাসানী’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘দেশ আজ এক ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে চলছে। শেখ হাসিনার দুঃশাসন বাহাত্তর-পঁচাত্তরের দুঃশাসনকেও হার মানিয়েছে। ’
শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের নামে জাতিকে বিভক্ত করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করলে অবশ্যই আমরা সমর্থন করতাম। কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের নামে কোনো নাটককে আমরা সমর্থন করতে পারি না। মুক্তিযুদ্ধকালীন যে সব আওয়ামী লীগের এমএলএ ও এমপিরা মালেক সরকারকে সমর্থন করেছিল তাদেরও বিচার করতে হবে। ’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘দেশীয় মাল দিয়ে আন্তর্জাতিক মানের আদালত হতে পারে না। যারা রাজাকারদের সঙ্গে আত্মীয়তা করে আবার সংসদে দাঁড়িয়ে যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা বলেন তখন জাতি লজ্জ্বিত হয়। ’
সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের পক্ষে কথা বলা আওয়ামী লীগ নেতাদের জাতীয় বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘ভারতীয় আগ্রাসনের কারণে আমার বোন ফেলানীসহ নিরীহ নাগরিকদের হত্যা করা হচ্ছে। ’
সেনাবাহিনীতে ক্যু চেষ্টাকারীরা আওয়ামী লীগ নেতাদের আত্মীয়স্বজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেনাবিদ্রোহের যে নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে তার নাটের গুরু আওয়ামী লীগের ভেতরেই লুকিয়ে আছেন। সৈয়দ আশরাফের বন্ধুরাই সেনা বিদ্রোহের সঙ্গে জড়িত। ’
গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, ‘মওলানা ভাসানীকে সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারিনি। তিনি ছিলেন দূরদর্শি রাজনৈতিক বিবেক। তিনি নিঃস্বার্থভাবে জাতির পক্ষে “খামোশ” উচ্চারণ করতেন। প্রকৃত ধার্মিক ও অসাম্প্রদায়িক নেতা ছিলেন মওলানা ভাসানী। ৭০-এর নির্বাচন বর্জনের মাধ্যমে মওলানা ভাসানী স্বাধীনতা আন্দোলন ত্বরাম্বিত করেছিলেন। ’
বাংলাদেশ ন্যাপের সভাপতি জেবেল রহমান গানির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দলের মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া।
আলোচনায় অংশ নেন জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, এনপিপি চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নিলু, এনডিপি চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, মুসলিম লীগ মহাসচিব আতিকুল ইসলাম, কল্যান পার্টি মহাসচিব আবদুল মালেক চৌধুরী, বিশিষ্ট সাংবাদিক এহসানুল হক জসিম, বিএনপি নেতা লুৎফর রহমান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাড. কাজী মনিরুল হুদা, ন্যাপের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুব্রত বারুরী, যুগ্ম মহাসচিব স্বপন কুমার সাহা, দপ্তর সম্পাদক মোঃ নুরুল আমান চৌধুরী টিটো, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভূঁইয়া, নগর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুহম্মদ কামালউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুন্নবী ডাবলু, বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক আন্দোলন সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসির, বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্রদল আহ্বায়ক এম এন শাওন সাদেকী, মতিয়ারা চৌধুরী মিনু, আমিনা খাতুন মনি প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১২