ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

কাউন্সিলের ঘোষণা গণফোরাম একাংশের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২১
কাউন্সিলের ঘোষণা গণফোরাম একাংশের

ঢাকা: গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ড. কামালকে ছাড়াই আবারও কাউন্সিল করার ঘোষণা দিয়েছে মন্টু-আবু সাইয়িদ গ্রুপ। আগামী ৩ ডিসেম্বর এই কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।

শনিবার (৩০ অক্টোবর)  ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদের সভাপতিত্বে গণফোরাম (একাংশ) কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ধিত সভা ও দুপুর ১টায় সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, আমরা দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ ও কার্যকর গণতন্ত্র চাই। সেই লক্ষে গণফোরাম তার সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এই সরকার দুর্নীতিবাজ ও কালো বাজারিদের সঙ্গে আঁতাত করে দেশ পরিচালনা করছে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাই। নতুন প্রজন্মকে সংগঠিত করে দুর্নীতিবাজ, অগঠনতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী এ সরকারকে উচ্ছেদ করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

তিনি আরও বলেন আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার অথবা সব দলের মতামতের ভিত্তিতে সমঝোতার সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন গণফোরামের মুখপাত্র ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব সিনিয়র আইনজীবী অ্যাড. সুব্রত চৌধুরী, অ্যাড. জগলুল হায়দার আফ্রিক, অ্যাড. মোহসীন রশিদ, চট্টগ্রাম মহানগর সাধারণ সম্পাদক রতন ব্যানার্জী, ময়মনসিংহের নেতা আবু রায়হান, সিলেটের আনসার খান, ফরিদপুরের নেতা বিশ্বজিৎ গাঙ্গুলী, কুমিল্লার আব্দুস সাত্তার পাঠান, ঠাকুরগাঁওয়ের রফিকুল ইসলাম, হবিগঞ্জের শ্যামল কান্তি দাস, মৌলভীবাজারের বকশি ইকবাল, জয়পুরহাটের মামুনুর রশিদ মামুনসহ বিভিন্ন জেলা, মহানগর ও উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সুব্রত চৌধুরী বলেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশ আজ এক গভীর রাজনৈতিক সঙ্কটে পতিত। সংবিধানকে উপেক্ষা করে কার্যকর গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগকে অগ্রাহ্য করে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকেন্দ্রিক শাসন ও সর্বগ্রাসী দুর্নীতি এ সঙ্কটের মূল কারণ। বাংলাদেশ লুটপাটের এক স্বর্গভূমি। অমিত সম্ভাবনার বাংলাদেশ আজ রুগ্ন ও দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতির কারণে ভোটাধিকার, গণতন্ত্র, আইনের শাসন, অর্থবহ কর্মসংস্থান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, ধনী-দরিদ্র ও গ্রাম-শহরের বৈষম্য দূরীকরণসহ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্ণ হলেও মুক্তিযুদ্ধের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন আজও বাস্তবায়ন হয়নি।

২০০৮ সালে মুক্তিযুদ্ধের দাবীদাররা ক্ষমতায় আসলে জনগণ ভেবেছিল, দেশে আইনের শাসন ও কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। মুক্তিযুদ্ধের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য ও স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। কিন্তু বর্তমান সরকার ২০১৪ সালের ভোটার বিহীন ও ২০১৮ সালের নিশিরাতের প্রহসনের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সেই স্বপ্নকে ভূলন্ঠিত করেছে, জনগণকে প্রতারিত করেছে। সরকার গণতান্ত্রিক রীতিনীতি, ন্যূনতম মূল্যবোধ ও চক্ষুলজ্জা বিবর্জিত পেশীনির্ভর স্বৈরশাসন জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। সন্ত্রাস, গুম-খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যা, হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা এবং জেল-জুলুম-নির্যাতনের মাধ্যমে জনগণকে ভোটাধিকারসহ মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার ও সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। দেশে এখন মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। নির্বিঘ্নে সভা সমাবেশ করার অধিকার নেই। দেশে এ গণতন্ত্রহীনতা এবং স্বেচ্ছাচারিতা কার্যতঃ বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ ও ৩০ লাখ শহীদের রক্তের সঙ্গে প্রতারনার শামিল।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত সব জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ আয়োজনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাই বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। এ বিষয়ে জনগণের মধ্যে ঐক্যমত সৃষ্টি হয়ে আছে। তাই আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ ইসি পুনর্গঠন করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়ঃ ১৮৫২ ঘণ্টা,  অক্টোবর ৩০, ২০২১
এমএইচ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।