ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বিদ্রোহী ভাতিজাকে সমর্থন দিয়ে সরে দাঁড়ালেন নৌকার প্রার্থী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২১
বিদ্রোহী ভাতিজাকে সমর্থন দিয়ে সরে দাঁড়ালেন নৌকার প্রার্থী তবিবর রহমান খান ও আজাদ রহমান খান

যশোর: সংবাদ সম্মেলনে বিদ্রোহী প্রার্থী আপন ভাতিজা আজাদ রহমান খানকে পাশে বসিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন যশোরের চৌগাছার জগদীশপুর ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তবিবর রহমান খান।  

রোববার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে চৌগাছা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।

তবিবর রহমান খান জানান, শারীরিক অসুস্থতার কারণে জরুরি চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ যেতে হবে। এজন্য নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। বিদ্রোহী প্রাথী আজাদ রহমান খান উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। তবে প্রতীক বরাদ্দের পর নৌকার প্রার্থীর হঠাৎ সরে দাঁড়ানোর ঘোষণাকে গভীর ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরী।
 
তিনি জানান ‘আমি র্দীর্ঘদিন ধরে জগদীশপুর ইউনয়িন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছি। এবারও আমার প্রতি আস্থা রেখে দলীয় সভানেত্রী আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে আমি আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে নিজের নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে সরে যাচ্ছি। আমার শারীরিক অসুস্থতার কারণে নির্বাচনের আগেই আমাকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যেতে হবে। এজন্য নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ’ 

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, তবিবর রহমান খান সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শারীরিক অসুস্থতার কথা বললেও প্রকৃতপক্ষে পারিবারের সম্প্রীতি বজায় রাখতে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নৌকার একটি পথসভা থেকে কর্মীরা বিদ্রোহী প্রার্থী ও তবিবর খানের আপন ভাতিজা আজাদ রহমান খানের অফিসে হামলা চালায়। এ সময় আজাদ রহমান খান ও তার দুই সমর্থক গুরুতর জখম হন। রোববার সংবাদ সম্মেলনেও তিনি মাথায় ব্যন্ডেজ নিয়ে চাচার (তবিবর রহমান খান) পাশে বসে ছিলেন। তবিবর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরও নাগরিক। তার স্ত্রী সন্তানরা সেখানেই থাকেন।
 
শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) রাতে নৌকা সমর্থকদের হামলায় বিদ্রোহী প্রার্থী আজাদ রহমান তার দুই সমর্থকসহ আহত হয়ে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। পরে তিনি এ বিষয়ে চৌগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও মামলা রেকর্ড হয়নি। এক পর্যায়ে তিনি আত্মহত্যারও হুমকি দেন। পরে বিষয়টি নিয়ে পরিবারের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এরপর পারিবারিক সিদ্ধান্তে নৌকার প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।  

এ প্রসঙ্গে নৌকার প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তবিবর রহমান খান সাংবাদিকদের বলেছেন, নৌকার প্রার্থী হিসেবে কাউকে সমর্থন দিতে পারি না। শারীরিক কারণে নিজেকে নিবাচনী কার্যক্রম থেকে সরিয়ে নিয়েছি।  

পাশে বিদ্রোহী প্রার্থী ভাতিজাকে বসিয়ে সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে তবিবর বলেন, পরিবারের ভুল বোঝাবুঝি থেকে ইউনিয়নের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ভুল বার্তা যাচ্ছিলো। তাই তাকে সংবাদ সম্মেলনে রাখা হয়েছিল।

চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, আমি এটা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মনে করছি। নৌকার প্রার্থী সেখানে দীর্ঘদিনের চেয়ারম্যান। সেখানে বারবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয় লাভ করেছে। ওখানে আওয়ামী লীগ এত দৈন্যদশায় পড়েনি যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রত্যাহার হতে হবে। কয়েকদিন আগেই তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। নৌকা জনপ্রিয় প্রতীক, এখানে আত্মীয়তা করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা তাকে কারণ দর্শনো নোটিশ দেবো কীভাবে তিনি ভাতিজাকে সমর্থন দেন। এটা আমরা কেন্দ্রে লিখিতভাবে জানাবো। আশা করি দল বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করবে। এ বিষয়টিতে আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২১
ইউজি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।