ঢাকা: আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কঠোরভাবে সতর্কতা অবলম্বন করলে নোয়াখালীতে সাম্প্রদায়িক হামলার দুঃসাহস হতো না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে নোয়াখালীর চৌমুহনীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা চৌমুহনীতে ও বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন।
নোয়াখালীর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, চৌমুহনীতে গত ১২ বছর এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। নোয়াখালীতে পূজামণ্ডপে কোনো হামলা হয়নি। এবারের তাণ্ডবটা কেন হলো, কীভাবে হলো, আমি সেখানকার নেতৃবৃন্দকে প্রশ্ন রাখতে চাই। কুমিল্লায় যখন ঘটেছে এতগুলো পূজামণ্ডপে, চৌমুহনীতে আপনারা কেন সতর্ক হলেন না? ভোট এলে হিন্দুদের কাছে গিয়ে আমরা যারা মায়াকান্না করি, হিন্দুদের দরদ দেখাই, বিপদের সময় আমরা তাদের পাশে দাঁড়াতে পারিনি কেন? এ প্রশ্ন আপনাদের প্রত্যেকের বিবেকের কাছে আমি রেখে গেলাম।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, আমাদের এত বড় সংগঠন, এত কর্মীবাহিনী। কুমিল্লার ঘটনার পরদিন চৌমুহনীর ঘটনা ঘটেছে। যদি আপনারা কঠোরভাবে সতর্কতা অবলম্বন করতেন, আওয়ামী লীগ সতর্ক থাকলে এদের এত দুঃসাহস হতো না—এরকম তাণ্ডব চৌমুহনীতে তারা করে গেল। সব কিছু প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে হয় না। সেখানে ২টি প্রাণহানি ঘটলো। আমাদের বিবেক কি আলোড়িত হচ্ছে না? আমি বলবো, আমাদের দায়িত্বপালনে ব্যর্থতা আছে। সেটা নিজেরা খুঁজে বের করুন। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আপনাদের সতর্কতার উপায় খুঁজে বের করতে হবে।
যে কোনো অবস্থায় দলের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশ দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এতগুলো মন্ডপ চৌমুহনীতে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিল, আপনারা কি নিরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন? একটা প্রতিরোধও তো হলো না, এটা নোয়াখালীর সন্তান হিসেবে আমাকে দুঃখ দিয়েছে। আমি নিজে লজ্জা পেয়েছি। কী জবাব দেব আজকে হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে!
হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের উদ্দেশে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ আপনাদের সঙ্গে আছে। আপনাদের ক্ষতিগ্রস্ত পূজামণ্ডপ, মন্দির ও ঘরবাড়ি সরকারিভাবে করে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে আমি সরকারের পক্ষ থেকে আপনাদের আস্বস্ত করছি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দলীয় প্রতীকে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত যখন থেকে নিয়েছি, বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কিছু কিছু সমস্যা আছে। ইদানীং কিছু কিছু সমস্যা হচ্ছে। অনেক সময় বিভেদ ও মারামারির মতো ঘটনাও ঘটে। কিন্তু আমরা নির্বাচনে প্রতীক দিয়ে আবার সামনের নির্বাচনে উন্মুক্ত দেব, এটা সত্য নয়। এমন কোনো চিন্তা আওয়ামী লীগ করেনি।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০২১
এসকে/এমজেএফ