ঢাকা: খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে দেওয়ার বিষয়ে আইনমন্ত্রী সংসদে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার জবাবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তিনি যে বলেছেন আইন নেই, এটা সঠিক নয়। ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪০১ ধারার বিধানমতে, সরকার শর্তহীন বা শর্তযুক্তভাবে কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির দণ্ড মওকুফ করতে পারেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একথা বলেন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে সরকার শর্তযুক্তভাবে দণ্ড স্থগিত করেছে, মওকুফ নয়। এরপরে এই আইনেই বলা হয়েছে, সরকার প্রয়োজনে যদি মনে করে তাহলে যেকোনো সময় এটার পরিবর্তন, সংযোজন এবং অন্য কোনো শর্ত আরোপ করতে পারেন। অর্থাৎ এটা সম্পূর্ণভাবে সরকারের এখতিয়ার। যে আবেদন করা হয়েছে, সেটা নতুন করে করা হয়েছে। এখন এটা সরকারের ওপর নির্ভর করছে যে, তারা খালেদা জিয়াকে বাইরে চিকিৎসার সুযোগ দেবে কি দেবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়ার বাসায় চিকিৎসা চলাকালে ১৩ নভেম্বর পুনরায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। দ্রুত ভর্তির সঙ্গে সঙ্গে রক্তদানের পাশাপাশি এন্ডোসকপি করা হয়। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিয়েও এটা কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না। এ দেশে যা কিছু চিকিৎসা আছে সবটাই করা হচ্ছে এবং হয়েছে। এর অতিরিক্ত কিংবা উন্নত চিকিৎসা এ দেশে সম্ভব নয়। এটা মেডিক্যাল বোর্ড বার বার আমাদের সুস্পষ্টভাবে জানিয়েছে। তারা বিদেশের উন্নত সেন্টারে দ্রুত ট্রান্সফার করার পরামর্শ দিয়েছেন। তারা আমাকে স্পষ্টভাবে বলেছেন, ম্যাডাম এখন যে অবস্থায় আছেন, সেটা সমাধানযোগ্য। কিন্তু সময়োপযোগী সঠিক চিকিৎসা না পেলে যেকোনো মুহূর্তে এমন এক অবস্থায় যেতে পারেন, যখন কোনো চিকিৎসাই আর কার্যকর হবার সুযোগ থাকবে না।
তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বাংলাদেশের মানুষের সবচেয়ে প্রিয় নেতা। তাকে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হবে না, এটা অমানবিক। আমরা অনতিবিলম্বে তার জীবন রক্ষার জন্য তাকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার দাবিতে আগামী ২০ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে এবং সারাদেশের মহানগর ও জেলায় গণ-অনশন পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শাহজাহান ওমর, শামসুজ্জামান দুদু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, জয়নাল আবেদীন, আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী, আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, কামরুজ্জামান রতন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, জহির উদ্দিন স্বপন, নাজিম উদ্দিন আলম, আমিনুল হক, জেড খান রিয়াজ উদ্দিন নসু, শায়রুল কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২১
এমএইচ/এমজেএফ