ঢাকা: এদেশের উন্নয়নের কথা শুনে কেউ বিস্মিত হচ্ছে না, বেকুব হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
সোমবার (২৯ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর প্রেসক্লাবে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত কল্যাণরাষ্ট্র ভাবনা বিষয়ক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘সাড়ে তিন কোটি মানুষ প্রায় দরিদ্র হয়ে গেছে। তারপরও উনারা (সরকার) বলছেন আমরা উন্নয়নের মডেল তৈরি করছি। এই সরকারকে মানুষ পছন্দ করে না, সামগ্রিকভাবে ভোট ডাকাতি করার কারণে, দুঃশাসন চালানোর জন্যে, শুধু এক ব্যক্তির কাছে সব ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করার জন্য আজ মানুষ তাদের পছন্দ করে না। এই সরকার সত্য কথা বলেলেও মানুষ বিশ্বাস করে না। মানুষের সুখও একটা বড় জিনিস আমার কাছে টাকা আছে। কিন্তু রাস্তায় বের হলে হঠাৎ কোন এক গাড়ি আমাকে চাপা দিতে পারে। সেটা সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি অথবা সুন্দর কোন গাড়ি। আমার রাস্তায় কোন নিরাপত্তা নেই, চলাবার কোন নিরাপত্তা নেই। আমি যে টাকা বেতন পাই তা দিয়ে চলে না। কারণ জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। উন্নয়ন আমি সেইটাকেই বলবো যেটা মানুষের সব প্রয়োজন মিটিয়ে সমুদ্রের দিকে নিয়ে যায়।
সরকারকে ফাঁকিবাজ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফাঁকি দিয়ে মানুষের ভোট কেড়ে নেয়, ফাঁকি দিয়ে মানুষের অধিকার কেড়ে নেয়, ফাঁকি দিয়ে অর্থনিয়োগ বোঝায়, জিডিপি নির্ভর উন্নয়নও এ ধরনের ফাঁকি দিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে।
ডাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা নাহলে অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। সেজন্য নাগরিক ঐক্যের কথা বলছি, সোস্যাল অর্গানাইজেশনের কথা বলছি, কিংবা কালচার অর্গানাইজেশন যদি বলে আমরা একটা কল্যাণ রাষ্ট্র নির্মাণ করবো তাহলে আপনাকে আগে ক্ষমতায় যেতে হবে। ক্ষমতায় গিয়ে কল্যাণের কাজ করতে হবে। অনেকেই হয়তো খেয়াল করবেন বিএনপি কল্যাণ রাষ্ট্রের কথা বলে, আওয়ামীলীগ কল্যাণ রাষ্ট্রের কথা জামায়ত ইসলাম কল্যাণ রাষ্ট্রের কথা বলে। তারা যদি কল্যাণ রাষ্ট্রের কথা বলে থাকে তাহলে আজ কেন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে ধর্ণা দিতে হচ্ছে?
সভার আলোচনায় বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা এমন এক দেশে বসবাস করি যেখানে করোনার সময়ে অনেক বড় লোকেরা চার্টার প্লেনে করে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যায়। যখনই বিমান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে তারা দেশ ছেড়েছে। আমরা এমন একটা রাষ্ট্রে আছি আমরা সংগত কারণে আমাদের স্বাধীনতা নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। কিন্তু এখনো দেখেন আমাদের একজন রাজনৈতিক নেত্রী তার চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন। এটার মানে হচ্ছে আমরা এখনো দেশটাকে সেভাবে প্রস্তুত করতে পারিনি। কল্যাণ রাষ্ট্র বলতে আমরা পুলিশ রাষ্ট্রের বিপরীত রাষ্ট্র বুঝি। আমার শিক্ষা,আমার স্বাস্থ্য ও আমার সামাজিক নিরাপত্তা এক পাশে রেখে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা কোন উন্নয়ন নয়। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের কাছে বিদ্যুৎকেন্দ্র কোন চাহিদার বিষয় না কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া তাদের অন্যতম চাহিদা।
নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডাক্তার জাহেদুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দলের সমন্বয়ক শহীদুল্লাহ কায়সার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মমিনুল ইসলাম, জিন্নুর চৌধুরী দিপু, মোফাখখারুল ইসলাম নবাব, মাহবুব মুকুল, আনিসুর রহমান খসরু, মঞ্জুর কাদির, বেগ শাহিন জাহান, শাহনাজ রানু প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২১
এমএমআই/এএটি