ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘লজ্জিত’ ইশরাক চাইলেন ক্ষমা 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২১
‘লজ্জিত’ ইশরাক চাইলেন ক্ষমা  ফাইল ফটো

ঢাকা: অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার বড় ছেলে বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেছেন, কয়েকদিন আগে আমাদের দলীয় একটি সভা হচ্ছিল ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে। সেখানে বক্তব্য দিতে গিয়ে আমি একপর্যায়ে আমার আবেগকে ধরে রাখতে পারিনি।

সেখানে আমি রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত অশালীন কিছু শব্দ ব্যবহার করেছি, সদ্য বহিষ্কৃত একজন প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। যারা আমার বক্তব্যগুলো নিয়মিত দেখেন আমাকে পছন্দ করেন, অনেক মুরব্বিরা রয়েছেন, নতুন প্রজন্মের অনেক ভাইবোনেরা রয়েছেন। আমি সবার কাছে মূলত ক্ষমা প্রার্থী যে, আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি আগামীতে চেষ্টা করবো এ ধরনের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

রোববার (১২ ডিসেম্বর) রাতে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।

ইশরাক বলেন, আমি নিজেও খুব লজ্জিত ছিলাম, মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আমার পিতৃতুল্য ও অভিভাবক বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আরও সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ছিলেন, তাদের মধ্যে ডাকসুর সাবেক ভিপি ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালামসহ দর্শক সারিতেও অনেক মুরব্বিরা ছিলেন।

ইশরাক বলেন, আমি এটা কোনো অজুহাত হিসেবে বলতে চাচ্ছি না। জাস্ট প্রেক্ষাপটটা বলতে চাচ্ছি। আমি ওই অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে সেই ব্যক্তির (ডা. মুরাদ হাসান) একটা ভিডিও আমি শুনছিলাম, সেখানে আমাদের কারাবন্দি নেত্রী খালেদা জিয়া, আমরা একটি স্পর্শকাতর অবস্থায় বিএনপির নেতাকর্মীরা রয়েছি। সেই মুহূর্তে এ কথাগুলো আমাদেরকে খুবই আঘাত হানে এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি। এটি কোনোভাবে কাম্য নয়।  আমরা নতুন প্রজন্ম যারা রাজনীতিতে আসছি, আমরা এটি বারবার বলে আসছি যে রাজনৈতিক শিষ্টাচার পুনঃপ্রতিষ্ঠা হওয়া উচিত। একে অপরের প্রতি সহনশীল এবং শ্রদ্ধা নিয়ে কথা বলা উচিত।  

তিনি বলেন, ওই দিন আমার বক্তব্য শেষ করার পর আমি নিজেই বিব্রতবোধ করছিলাম, যে এতগুলো মুরব্বি এবং টিভি ক্যামেরার সামনে আমি এই শব্দ ব্যবহার করেছি। তখন আমি অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করি। আমি বাসায় ফেরার পরে আমার মা আমাকে বলেন, এটি একটি অত্যন্ত গুরুতর ভুল হয়েছে আমার দ্বারা। আমরা ভাইবোনরা যখন বড় হয়েছি, তখন আমার মা আমাদের সেই শিক্ষাই দিয়েছেন কখনও অশালীন শব্দ না ব্যবহার করার জন্য পরিস্থিতি যাই হোক। পরবর্তীতে আমি আমাদের দলীয় মহাসচিবসহ অন্য নেতাদের সাথে সরাসরি দেখা করে তাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছি এবং আজকে এই ভিডিওর মাধ্যমে দর্শকশ্রোতা যারা রয়েছেন, বিশেষ করে যাদের আমার প্রতি একটা প্রত্যাশা রয়েছে যে একটি সুস্থ ধারার রাজনীতি হয়তোবা আমরা সূচনা করতে পারি। তাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, আপনারা আমাকে এই একটি ভুলের জন্য ক্ষমা করে দেবেন এবং এটিকে দিয়ে আমার সার্বিক কর্মকাণ্ড মূল্যায়ন না করার জন্য আমি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। আগামী আপনাদের আশা ভঙ্গ হবে না সে ধরনের কাজই আমি করে যাবো ইনশাল্লাহ।

তিনি আরও বলেন, আমাদের গণমাধ্যম যে এই রকম মেরুদণ্ডহীন হয়ে গেছে এটা দুঃখজনক, লজ্জাজনক এবং শঙ্কার কারণ। আমরা দেখেছি যে বিভিন্ন সত্য নিউজ ঘটনা যেগুলো রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় সেগুলো অতি বিলম্বে এখানে ছাপানো হয়েছে, অথবা কোনো কোনো নিউজ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অতএব গণমাধ্যম যে নিয়ন্ত্রিত, সরকার ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো কালো আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সেটি স্পষ্ট। এর বাইরেও আপনারা দেখেছেন যে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য বিদেশি সহযোগী সংস্থা বিবৃতি দিয়েছে, যে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায়।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসে দাঁড়িয়েছি। আমাদের আন্দোলন বৃথা যেতে দেব না। গণতন্ত্র রক্ষা এবং পুনরুদ্ধারে যতগুলো আন্দোলন হয়েছে আজ অব্দি। মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে কারও রক্ত বৃথা যেতে দেব না। ইনশাল্লাহ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আবারও একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব। ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনবো এবং একটি সংসদীয় গণতন্ত্রের মাধ্যমে সব জনপ্রতিনিধিদের যারা রাষ্ট্র পরিচালনায় রয়েছেন, তাদেরকে জনগণের জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসবো ইনশাল্লাহ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২১
এমএইচ/জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।