সাভার (ঢাকা): পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সাভারে চেয়ারম্যান পদে অধিকাংশ ইউপিতে নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। এরমধ্যে সাভার সদর ইউনিয়নে প্রকাশ্যে ও লুকিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীর সঙ্গে প্রচারণায় অংশ নিয়ে ভোট চাইতে দেখা ও জানা গেছে খোদ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ১১টি ইউনিয়নের ১০টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিপরীতে আছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। তার মধ্যে আশুলিয়ার ৪ ইউনিয়নের ৬ বিদ্রোহী প্রার্থীকে ইতোমধ্যে বহিষ্কার করা হয়েছে দল থেকে। তবে আওয়ামী লীগের বেশকিছু নেতাকর্মীরা বিদ্রোহীদের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় নির্বাচনী মাঠে এই দলের ভেতর উত্তেজনা বিরাজ করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পঞ্চম ধাপে সাভার সদর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের সঙ্গে আনারস প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন শ্রমিকলীগের সাভার থানা আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল। ওই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে পরাজিত করার জন্য সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজিবের শ্যালক রুবেল বিদ্রহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নয়টি ওয়ার্ডের সভাপতি ও সম্পাদকদের মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি তিনি নিজেও রাতের আধারে লুকিয়ে সাভার সদর ইনিয়নের বেশ কয়েকজন ইউপি সদস্যের বাড়িতে গিয়ে বিদ্রোহীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণা করার নির্দেশ দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সাভার সদর ইউনিয়নের ইউপি সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, দলীয় কোন্দলের কারণে সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক শ্যালক ও সাভার আওয়ামী লীগ ইউপি সাধারণ সম্পাদক রুবেলের মাধ্যমে নৌকা পরাজয়ের লক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করছেন। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী নয়টি ওয়ার্ডের ১৮ জন সভাপতি ও সম্পাদক দিয়ে নৌকার প্রতীকের প্রার্থী সোহেল রানার বিপক্ষে বিদ্রোহীর হয়ে নির্বাচনী মাঠে দিনরাত কাজ করছেন।
সাভার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান সোহেল রানা বাংলানিউজকে বলেন, আমার নিজ দলের বেশকিছু নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় নেমেছেন। তারা নৌকাকে পরাজিত করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমি বিষয়টি সিনিয়র নেতাদের জানিয়েছি।
তবে এ বিষয়ে সাভার সদর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রুবেল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি নৌকার প্রচারণায় কাজ করছেন। কেউ তার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়ে নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে গিয়ে প্রচারনার অংশ নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। উল্টো বিদ্রোহী প্রার্থীদের দমানোর জন্য তারা মাঠে কাজ করছেন বলে দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করে এমনকি মেসেজ দিয়েও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা দৌলা বাংলানিউজকে বলেন, দলের হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীদের সহযোগীতা করা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের সামিল। এসব অভিযোগের সত্যতা পেলে দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হবে।
প্রসঙ্গত, ৫ জানুয়ারি সাভার উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে তেতুলঝোড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যানসহ ৭ জন সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২১
এনটি