ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস রোগসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত। গত ১৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে তার সাবেক প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা ভালো নয়। লিভার সিরোসিস ও নানা জটিল রোগে আক্রান্ত এই প্রবীণ নেত্রীকে জোড়াতালি দিয়ে কোনো মতে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। দেশে তার প্রাণরক্ষার উপযোগী চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। তার অবস্থা ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। দুটি বানোয়াট মামলায় আদালত তাকে সাজা দিয়েছেন। সেই রায় বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ। সেই উভয় রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল বিবেচনাধীন। অর্থাৎ কোনো মামলায়ই তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত রায় হয়নি। দেশে ন্যায়বিচার থাকলে এবং বিচার ব্যবস্থা সরকারের প্রভাবমুক্ত থাকলে তিনি খুব স্বাভাবিক ভাবেই জামিনে মুক্ত থাকতেন। কিন্তু সে সুযোগ নেই।
কোনো মামলার চূড়ান্ত রায় ও নিষ্পত্তি হবার আগেই জামিন না দিয়ে তাকে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটাই চূড়ান্ত অবিচার। চূড়ান্ত রায়ের আগেই কাউকে দণ্ড ভোগে বাধ্য করাটাই চরম অন্যায় ও অসভ্যতা। ক্ষমতাসীনরা সেটাই করেছে খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে।
জেলে তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হয়নি। জোর করে সরকারের ইচ্ছায় যে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে সেখানে চিকিৎসার বদলে তার অপচিকিৎসা হয়েছে। বন্দী অবস্থায় গুরুতর অসুস্থ হলে সরকার তাকে দেশের ভেতরে যেকোনো হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার কথা বলে নির্বাহী আদেশে কারামুক্ত রেখেছে। এ সুযোগ আগে বেগম জিয়ার পক্ষে বারবার চাওয়া হয়েছে। ওরা দেয়নি। দিয়েছে গুরুতর অসুস্থতা নিশ্চিত করার পর।
এখন আর দেশে তার প্রাণরক্ষার উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। কয়েকটি মাত্র উন্নত দেশেই কেবল তা সম্ভব। ডাক্তাররা তাই বলছেন। বেগম জিয়ার সঙ্গে ক্রমাগত বে-আইনি আচরণ করা বেআইনি সরকার এখন আইন দেখাচ্ছে। অনেক অতীত নজিরের বিপরীতে আইনের এই সরকারি ব্যাখ্যাও মিথ্যা ও মনগড়া। গায়ের জোরে একের পর এক আইনভাঙা সরকার যখন আইন দেখায় তখন তার অর্থ হলো বেগম জিয়াকে বিনা চিকিৎসায় মেরে ফেলা। ওরা বিদেশে বেগম জিয়ার উপযুক্ত চিকিৎসার ওপর যে বিধিনিষেধ ও শর্ত আরোপ করে রেখেছে সেটা যদি তোলেও এমন সময়ে তুলবে যখন আর বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিলেও আর ফল আসবে না। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২১
এমএইচ/আরআইএস