ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের সামনে অত্যন্ত কঠিন পথ, এই পথ আমাদের পাড়ি দিতে হবে অত্যন্ত সুশৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে। ঐক্যবদ্ধভাবে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আমাদের একটা ইস্পাত দৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মহানগর বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে দিনটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ দাবি করে বিএনপি সারাদেশে কর্মসূচি পালন করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিভিন্ন জেলায় আমাদের যে সমাবেশ হয়েছে, প্রত্যেকটি সভায় মানুষের ঢল নেমেছে। আজকে ঢাকাতেও ঢল নেমেছে। জনগণের উত্তাল ঢেউ শুরু হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি জনতার এই উত্তাল তরঙ্গের মধ্যে দিয়ে সুনামির মতো ফ্যাসিবাদী, দুর্বৃত্ত, দুর্নীতিপরায়ণ, হত্যাকারী আওয়ামী লীগ সরকার ভেসে যাবে। আমাদের দায়িত্ব হলো, এই সময়ে জনগণের কাছে চলে যেতে হবে এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে উত্তাল তরঙ্গের সৃষ্টি করতে হবে।
তিনি বলেন, ২০২১৪ সালের এই দিন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকার বিনা নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে গণতন্ত্রকে সেদিন হত্যা করেছিল। বাংলাদেশে একটি পাতানো প্রহসণের নির্বাচন করা হয়েছিল। ২০১৪ সালের ওই নির্বাচন বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দল বর্জন করেছিল। ভোটাররাও ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হননি। আপনাদের মনে থাকার কথা পত্রিকায় নির্বাচনের পরের দিন যে ছবি ছাপা হয়েছিল, তাতে দেখা গিয়েছিল শুধু কুকুরেরা ভোট কেন্দ্রে শুয়ে আছে। সে কারণে আমাদের সংগ্রামী জাগপা নেতা (প্রয়াত) শফিউল আলম প্রধান সেই নির্বাচনকে কুত্তা মার্কা নির্বাচন বলেছিলেন।
বিএনপি কেন সেই নির্বাচন বর্জন করেছিল জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ইতোপূর্বে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে সংযোজন করেছিলেন, এই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তারা যখন দেখলো, এত খারাপ কাজ করেছে যে জনগণ তাদের ভোট দেবে না, তখন তারা সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছিল। এর নায়ক ছিলেন কে, আমি গুরুত্বসহকারে বলতে চাই, নায়ক ছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক। ভবিষ্যতে যদি কোনো গণতান্ত্রিক সরকার আসে তাহলে গণতন্ত্রকে হত্যা করার জন্য এই বিচারপতি খায়রুল হকেরও বিচার হবে।
তিনি বলেন, সেদিন জাতিসংঘের বিশেষ দূত অসকার ফার্নান্দেস তারানকো এসেছিলেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে মিটিং করেছিলেন। তখন আওয়ামী লীগ কথা ছিয়েছিল, এখন তো হাতে সময় নেই, সে কারণে আমরা বাধ্যতামূলক এই নির্বাচনটা করে ফেলি। তিন মাসের মধ্যে আমরা বিরোধীদলের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন করে নির্বাচন করবো। সেটাও তারা করেনি, তারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এই আওয়ামী লীগ সবসময়ই জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তারা জনগণের অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়েছে। যেমন ১৯৭৫ সালে বাকশাল কায়েমের মধ্যে দিয়ে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছিল।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন, মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশারফ হোসেন, সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, নির্বাহী সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, যুবদল উত্তরের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা শাহিন, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০২২
এমএইচ/এমজেএফ