ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

অনুগত লোক দিয়েই ইসি গঠন করবে: রিজভী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২২
অনুগত লোক দিয়েই ইসি গঠন করবে: রিজভী কথা বলছেন রুহুল কবির রিজভী।

ঢাকা: ভদ্র-সাহসী কোনো লোক নয় সরকার তাদের অনুগত লোক দিয়েই নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে বনানী কবরস্থানে আরাফাত রহমান কোকোর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া মোনাজাতের পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, আমি আগেও বলেছি আওয়ামী লীগ চায় একদলীয় শাসন। আর বিএনপি চায় বহুদলীয় গণতন্ত্র। সেজন্য আমাদের বক্তব্য আর তাদের বক্তব্যের মধ্যে পার্থক্য থাকবে। এখন যে সংসদ আছে সেটা একদলীয় সংসদ, নব্য বাকশালী সংসদ। ওখানে যে আইন হবে সেটা প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে। আমি গতকালও বলেছি সার্চ কমিটির যে খসড়া উপস্থাপন করা হয়েছে এটা প্রধানমন্ত্রী যেভাবে চাইবেন, মুজিবকোর্ট পরা মানুষগুলোকেই সার্চ কমিটিতে নেওয়া হবে এবং উনারা সার্চ করে যে ব্যক্তিদেরকে দিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করবেন তারাও সেই মুজিবকোর্ট পরা মানুষই হবে। সুতরাং এটা একেবারেই একতরফা।

তিনি বলেন, যেভাবে হুদা কমিশন, রকিব কমিশন করা হয়েছিল, ওই রকম আর একটি কমিশন তারা করছেন। এটা একটা ড্রেস রিহার্সাল। আইন যেটা করার কথা বলছেন সেটা ১৯৭২ সালের সংবিধানে নির্দেশনা আছে। কিন্তু কোন সংসদে, যে সংসদে জনগণের প্রতিনিধিত্ব নেই। জনগণের অংশগ্রহণ নেই। জনগণ এখানে প্রশ্ন করতে পারে না। সেই সংসদে যে আইন হবে সে আইনতো বাকশালী আইন হবে। একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য যে নির্বাচন কমিশন গঠন দরকার সেটি এই আইনের মাধ্যমে হবে না। এটা শেখ হাসিনার ইচ্ছার প্রতিফলন হবে।

আইনমন্ত্রী দুই বছর ধরে বলছেন সময় নেই এখন হঠাৎ করে আইন (নির্বাচন কমিশন গঠন আইন) হচ্ছে এ বিষয়টা কিভাবে দেখছেন? জবাবে রিজভী আহমেদ বলেন, বুঝতেই পারছেন এখানে দুরভিসন্ধি আছে। এরমধ্যে এক ধরনের গভীর চক্রান্ত আছে। সেই চক্রান্তের অংশ হিসেবেই করছে। যেভাবে হুদা কমিশন, রকিব কমিশন করেছে, সেভাবেই হবে। তবে, একটা আইনি কাঠামো দেখাতে চাচ্ছে।

তিনি বলেন, এই আইন পাসের মধ্য দিয়ে দেশের চলমান সংকটের সমাধান হবে না। এটা বিএনপির একার বক্তব্য নয়, সবাই একই কথা বলছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা এখানে একটা পয়েন্ট দেখবেন খুবই অনৈতিক। এতেই বোঝা যায় যে এটা অসদুদ্দেশ্যে করছে। বলছে যাদের অভিযোগ আছে যারা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়েছে তাদেরকে নির্বাচন কমিশনে নিলে কোনো অসুবিধা নেই। এতেই বোঝা যাচ্ছে গত ১৪ বছর যারা অন্যায় অপকর্ম করেছে খুঁজে খুঁজে তাদেরকে দিয়েই কমিশন গঠন করবে। কোনো ভদ্র, ভালো মানুষ সাহসী লোক তারা চায় না, তারা অনুগত লোক চায়।

রিজভী আরও বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বার বার দরজা ভেঙে গণতন্ত্রকে অবমুক্ত করেছিলেন। আমাদের সেই প্রিয় নেত্রী তখনও গণতন্ত্রের সংগ্রামে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। যাতে আন্দোলন তীব্র বেগে ধাবিত না হয় সেজন্য খালেদা জিয়াকে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল, যেটা আপনারা জানেন। আপনারা জানেন কীভাবে গোল মরিচের স্প্রে করা হয়েছে। তখন নানাভাবে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে, চারিদিকে বালুর ট্রাক দিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করা হয়েছিল। এই অবিচার, জুলুম, সুদূর প্রবাসে তার কনিষ্ঠপুত্র আরাফাত রহমান কোকো সহ্য করতে পারেননি। সেখানে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

তিনি বলেন, যখন তাকে নিয়ে আসা হলো। তখন অবরুদ্ধ মায়ের কোলে ছেলের মাথা। এই শোক, বেদনা, এই দুঃখ শুধু একটা পরিবারের নয়, শুধু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নয়। এই দৃশ্য গোটা জাতি দেখেছে। গোটা জাতি শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়েছিল। এটা অন্য কোনো বিষয় না, এটা শুধুমাত্র দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে দুর্বল করার জন্যই। তারা এই জুলুম নির্যাতন করেছে। কোকোর মৃত্যু শুধু নিছক মৃত্যুর ঘটনা নয়। বরং সামগ্রিক আন্দোলন সংগ্রামের যে অংশ সেখানে সরকারি নির্যাতনেরই শিকার হয়েছেন আরাফাত রহমান কোকো।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, যুবদল নেতা শফিকুল ইসলাম মিল্টন ও এসএম জাহাঙ্গীর আলম।

বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২২
এমএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।