রাবি: উৎসব মুখর পরিবেশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের ১৭টি হলের সম্মিলিত হল সম্মেলন-২০২২ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাস বাংলাদেশ মাঠে আয়োজিত হল সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ বাংলাদেশের তথা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন। ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান ভাগ হওয়ার সময় বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন এই স্বাধীনতায় পূর্ব পাকিস্তানের কোনো লাভ হবে না। ১৯৪৮ সালে বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। পূর্ব পাকিস্তানের প্রত্যকটি লড়াই, আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগকে বার বার ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে, নানা চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। এ সব ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগকে হতে হবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আপনজন। হলে সিট না থাকলে ছাত্রলীগ সিটের ব্যবস্থা করবে, খাবার না থাকলে খাবার ব্যবস্থা করবে, বই না থাকলে বইয়ের ব্যবস্থা করবে, সব সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে ছাত্রলীগ-এটিই আমরা প্রত্যাশা করি।
তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রতিটি ক্যাম্পাসকে গ্রিন-ক্লিন করে গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ এখন সবক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। এজন্য তরুণদের তৈরি করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আইটি কেন্দ্রিক নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। রাবি উপাচার্যকে এ বিষয়ে পাঠ্যক্রমে কিছু অর্ন্তভূক্তির জন্য অনুরোধ জানিয়েছি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, হল সম্মেলনের মাধ্যমে ছাত্রলীগের অনেক ত্যাগী, ছাত্রবান্ধব নেতা উঠে আসবে। যারা নিজের জন্য কাজ না করে শিক্ষার্থীদের জন্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য, দেশের জন্য কাজ করবে।
কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, আগমীতে জাতীয় নির্বাচন রয়েছে। নির্বাচন উপলক্ষে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিরা বিভিন্ন অযৌক্তিক দাবি নিয়ে রাস্তায় নামার চেষ্টা করছে। তারা খুবই অল্প সংখ্যক মানুষ। সারাদেশে তাদের সব নেতাকর্মীর চেয়ে আমাদের এক ইউনিটের কর্মী বেশি রয়েছে। তাই তাদের শক্তভাবে মোকাবিলা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সঙ্গে শ্রম দেওয়া হল ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী সবারই দায়িত্বে আসার যোগ্যতা রয়েছে। তবে কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে হয়তো সবাইকে সেই পদগুলো দিতে পারবো না। আমরা এমন কিছু নেতার হাতে নেতৃত্ব তুলে দিতে চাই, যারা রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়রের হাতকে আরও শক্তিশালী করবেন, কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের হাতকে শক্তিশালী করবেন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের বিপদে আপদে ও অধিকার আদায়ে সব সময় পাশে থাকবেন তাদের হাতে এই নেতৃত্ব তুলে দিতে চাই।
এর আগে দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাস বাংলাদেশ মাঠে জাতীয় ও ছাত্রলীগের দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া। সম্মেলনের শুরুতে প্রধান অতিথিসহ সব অতিথিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। সম্মেলনে শোক প্রস্তাব পাঠ শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধে সব শহীদ এবং ছাত্রলীগের শহীদ ও প্রয়াত নেতাকর্মীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ্ মখদুম হল ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফ বিন জহিরের সভাপতিত্বে ও শহীদ ড. শামসুজ্জোহা হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বরজাহান আলীর সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আলী কামাল, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল সরকার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা, আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি খালিদ হাসান নয়ন, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ হিল বারী, সহ-সম্পাদক শরিফুল ইসলাম সাদ্দাম, আহসান হাবীব বাপ্পী, শফি আজাদ বান্টি ও প্রদীপ কুমার সাহা পিংকু, মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩১ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২২
আরএ