ঢাকা: বিচার বিভাগ দলীয়করণে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা ন্যায় বিচার পাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চ প্রাঙ্গণে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এদেশে একটা ছদ্মবেশী একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সেজন্যই তারা একে একে সমস্ত স্বাধীন যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে সেই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে ফেলেছে। সবার আগে তারা হাত দিয়েছে সেটা হচ্ছে বিচার বিভাগ। এ বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে আজকে জনগণের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা, দেশে মানুষ অন্তত তার প্রয়োজনের সময় যখন নির্যাতিত হবে রাষ্ট্র দ্বারা, তখন বিচার বিভাগের কাছে গিয়ে একটা রিলিফ পাবে…। দুর্ভাগ্যের কথা আজকে সেই বিচার বিভাগকে তারা দলীয়করণ করে নিয়ন্ত্রণ করে এমন একটা জায়গায় নিয়ে গেছে বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের যে রায়গুলো হয়, সেগুলো রায় হয়ে যাচ্ছে একেবারে জনগণের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, তারা ন্যায় বিচার পাচ্ছে না।

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, অতি সম্প্রতি আপনারা দেখেছেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিনী ডা. জুবাইদা রহমান যিনি রাজনীতির সঙ্গে কখনই সম্পৃক্ত ছিলেন না, তার বিরুদ্ধেও দুদক একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে তার কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি এটা অত্যন্ত বেআইনি কাজ, আমরা মনে করি এটা শুধু বিচার বিভাগের স্বাধীনতা শুধু নয়, বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

দেশের অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, সারাদেশে একটা গণতন্ত্রহীন অবস্থা বিরাজ করছে। আমাদের বুকের উপরে একটা বেআইনি জোর জবর দখলকারী সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। শুধু তাই নয়, ক্ষমতা দখল করার পরে তারা দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, প্রত্যেকটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে এবং দেশের জনগণকে একটা অন্ধকার গহ্বরের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ৬০০-এর অধিক নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে, সহস্রাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে নেতাকর্মীসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে এ ইফতার অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

ইফতারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, আহমেদ আজম খান, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, জয়নুল আবদিন ফারুক, আমান উল্লাহ আমান, অধ্যাপক শাহিদা রফিক, তাহসিনা রশদীর লুনা, শ্যামা ওবায়েদ, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আফরোজা আব্বাস, অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার বড় ছেলে সদ্য কারামুক্ত ইশরাক হোসেন, গণফোরামের মোস্তফা মহসিন মন্টু, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণঅধিকার পরিষদের রেজা কিবরিয়াসহ ২০ দলীয় জোটের নেতা, কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা অংশ নেন।

ইফতার পূর্ব অনুষ্ঠানে দলের গুম হওয়া নেতাদের পরিবারের সদস্যরাও বক্তব্য রাখেন।

মহানগর দক্ষিণ বিএনপির বিশাল আয়োজনের এ ইফতারে বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের সহস্রাধিক নেতাকর্মী-সমর্থক অংশ নেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২২
এমএইচ/আরবি