ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

উৎপাদন বাড়ানোর সঙ্গে মিতব্যয়ী হতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৩ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২২
উৎপাদন বাড়ানোর সঙ্গে মিতব্যয়ী হতে হবে: প্রধানমন্ত্রী কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকা: করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা, আন্তর্জাতিক বাজারদরের ঊর্ধ্বগতি এবং সংকটের কথা তুলে ধরে খাদ্য-শস্যের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি সবকিছুতে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (১৭ মে) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সভার (ভার্চ্যুয়াল) সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হন তিনি।

বৈশ্বিক সংকটের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনা, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এটা আমাদের অর্থনীতির ওপর বিরাট প্রভাব ফেলেছে। শুধু আমরা না, উন্নত, অনুন্নত দেশেই সমস্যা। দ্রব্যমূল্যের চাপ এখন ইউরোপে।  এখন এমন দেশ আছে যেখানে ১৭ পারসেন্ট থেকে ৫০ পারসেন্ট পর্যন্ত দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। ’

তিনি বলেন, ‘জার্মানির মতো জায়গায় ভোজ্য তেলের অভাব, একমাত্র অলিভ অয়েল ছাড়া কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না। ইংল্যান্ডের মতো জায়গায় সেখানে তেল নির্দিষ্ট করে দেওয়া, এক লিটারের বেশি কেউ নিতে পারবে না। আমেরিকায় ইনফ্লেশন আট ভাগের ওপর উঠে গেছে, ১০ ভাগে পৌঁছে যাবে। ১ ডলারের ডিজেল-পেট্রোল এখন ৪ ডলারের ওপর উঠে গেছে। সেখানেও এখন মানুষ এক বেলা খেতেই কষ্ট। ’

‘সারা বিশ্বব্যাপীই কিন্তু এই অবস্থা বিরাজমান। তারপরও আমরা আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে পেরেছি। ’

সবাইকে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেগুলো আমাদের আমদানি করতে হয় সেগুলোর তো দাম বেড়ে যাচ্ছে। আমাদের জাহাজ ভাড়া বেড়ে গেছে। আর তাছাড়া যেখানে যেখানে উৎপাদন হতো তা হ্রাস পেয়েছে, সেখানে যুদ্ধ এবং করোনার কারণে। তাহলে আমাদের দেশের ভেতরে একটু মূল্যস্ফীতি বা জিনিসের দাম বাড়বে। ’

‘আমাদের দেশবাসীকে আমি এইটুকু অনুরোধ করবো সবাই যদি একটু সাশ্রয়ী ও মিতব্যয়ী হয় এবং সবকিছু ব্যবহারে যেন একটু সতর্ক হয় তাহলে খুব সমস্যা হওয়ার কথা না। দ্রব্যমূল্যের দাম যে বেড়েছে, এটা যে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কারণে এই কথাটা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতে হবে। ’

বৈশ্বিক মন্দার মধ্যেও সরকার বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্য অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখানে অনেকে সমালোচনা করেন। তারপরেও বলব আওয়ামী লীগ সরকার আছে বলে দ্রব্যমূল্য কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি।  যদি এখন অন্য কেউ থাকতো দেশের যে কী অবস্থা হতো, রাস্তায় রাস্তায় মারামারি শুরু হয়ে যেত। কাজেই সেটা হয়নি। আমরা সেই জায়গা থেকে দেশকে মুক্ত রাখতে পেরেছি। ’

উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমাদের মাটি-মানুষ আছে, এই মাটি-মানুষ নিয়ে আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে, মানুষের চাহিদা পূরণ করার চেষ্টা করতে হবে। এজন্য আমি জাতির পিতা পদাঙ্ক অনুসরণ করে ডাক দিয়েছি যে এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে। আমাদের খাবার আমরা উৎপাদন করবো। আমরা নিজেরা তো ব্যবহার করবোই আবার অন্যকেও সহযোগিতা করতে পারবো এবং আমরা তা পারি। আমাদের সেভাবে দেশের মানুষকে বলতে হবে। ’

বৈশ্বিক এ মন্দার সময় বেছে বেছে প্রকল্প নেওয়া হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা এই প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও বাজেট দিতে যাচ্ছি। ভালোই বাজেট মোটামুটি আমরা মনে করি। প্রকল্প নেওয়া ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ঠিক করতে হবে। কোনটা আমার এক্ষুণি প্রয়োজন, সেগুলো আমরা করব। আর যেগুলো এক্ষুণি প্রয়োজন নেই সেগুলো একটু ধীরগতিতে করব। যেন আমাদের অর্থনীতির ওপর চাপটা না আসে। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে বিশ্বব্যাপী এই মন্দা এবং বিশ্বব্যাপী একটা দুর্ভিক্ষ অবস্থার দিকে যাচ্ছে সেখানে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। সেজন্য টাকা খরচের ক্ষেত্রে বা সব ক্ষেত্রে আমাদের অত্যন্ত সতর্ক হতে হবে। অহেতুক আমাদের সম্পদ যেন আমরা ব্যয় না করি। সেগুলো আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে। আমরা যদি খুব ভালোভাবেই হিসাব করে চলতে পারি তাহলে আমাদের দেশে কোন সমস্যা হবে না। এটা আমি বিশ্বাস করি। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৩ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২২/আপডেট: ১৭১৩ ঘণ্টা,
এমইউএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।