পাবনা (ঈশ্বরদী): ভৌতিক বিল, লোডশেডিং, সরকার নির্ধারিত কয়েক দফার বর্ধিত বিল নিয়ে ঈশ্বরদী উপজেলায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকরা রয়েছেন ভোগান্তিতে। এর মধ্যে ফের এ মাসে গ্রাহক বিলে চাপানো হয়েছে 'জামানত' এর বাড়তি বোঝা।
জানা যায়, ফেব্রুয়ারি-মার্চ ২০২৩ সালের বিলে বাড়তি সিল মেরে ‘জামানত যোগ’ শব্দ লিখে বাড়তি ৪০০ টাকা করে যোগ করা হয়েছে। এতে করে আর্থিক মন্দার বাজারে আরও আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দাশুড়িয়া জোনভুক্ত ঈশ্বরদী উপজেলার গ্রাহকরা।
ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নে নতুনহাট গোলচত্বর মোড় এলাকার গ্রাহক মোহন হাসান বাংলানিউজকে জানান, এই দুর্মূল্যের বাজারে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সেই সঙ্গে দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে বিদ্যুতের দাম। এভাবে আমাদের জীবন দূর্বিষহ হয়ে উঠছে। এর মধ্যে আবার এ মাসের বিদ্যুৎ বিলে ৪০০ টাকা জামানত ধরা হয়েছে। বিল দেওয়া লোকের কাছে জানতে তিনি বলেন এ বিষয়ে তিনি জানেন না। অফিসে কথা বলুন, অফিসে কথা বললে তারা বলেন এটা শুধু আপনার না, সবার থেকেই এই জামানত নেওয়া হচ্ছে।
উপজেলার পাকশী ইউনিয়নে রূপপুর গ্রামের গ্রাহক মজিবর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বিনা নোটিশে এভাবে অতিরিক্ত ৪০০ টাকা নেওয়া মানে গ্রাহকের রক্ত চুষে নেওয়ার মত। মিটার না দেখে ইচ্ছামত বিল তৈরি, যখন তখন লোড শেডিং করাসহ পল্লী বিদ্যুতে হয়রানির শেষ নেই। তারপর আবার জামানত, যেন আমরা এদেশে ভেসে এসেছি, যে কোনো সময় ঘরবাড়ি ফেলে পালিয়ে যাব, তাই জামানত দিতে হবে।
গ্রাহক মোহন হাসান ও মজিবর রহমানের মত প্রায় ৩০-৩৫টি পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকের একই রকম অভিযোগ।
জানতে চাইলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দাশুড়িয়া জোনাল অফিসের ডিজিএম (উপ মহাব্যবস্থাপক) কামাল হোসেন বলেন, যেসব গ্রাহকদের জামানত নেওয়া হচ্ছে, তাদের বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার সময় ১ কিলোবাইট বিদ্যুৎ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বর্তমানে তারা ১ কিলোবাইটের বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন। সেজন্য বাড়তি বিদ্যুৎ ব্যবহারে বাড়তি জামানত নেওয়া হচ্ছে।
গ্রাহকদের না জানিয়ে হঠাৎ কেন এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো এ প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রত্যেক গ্রাহককে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনো গ্রাহকই এমন চিঠি পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে জানিয়ে তার কাছে সেই চিঠির নমুনা চাইলে তিনি তা দেখাননি। কতজন গ্রাহকের কাছে ৪০০ টাকা বাড়তি জামানত নেওয়া হচ্ছে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন এরকম কোনো হিসাব আমার কাছে নেই।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি পাবনা-১ এর জিএম (মহাব্যবস্থাপক) আকমল হোসেনের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে, তিনি বলেন ডিজিএম মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলুন। জামানত কি শুধু দাশুড়িয়া জোনেই নেওয়া হচ্ছে নাকি সব জায়গায়? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সব জায়গায় নেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২৩
আরএ