ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

সমন্বিত বিদ্যুৎ-জ্বালানি মহাপরিকল্পনায় ৩ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০২৩
সমন্বিত বিদ্যুৎ-জ্বালানি মহাপরিকল্পনায় ৩ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব

ঢাকা: জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে মহাপরিকল্পনায় তিনটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান।  

একইসঙ্গে শিগগিরই সমন্বিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মহাপরিকল্পনা (আইপিইএমপি) প্রকাশ করা হবে বলেও জানান তিনি।

 

বুধবার (৯ আগস্ট) জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

বিদ্যুতের সিনিয়র সচিব বলেন, সম্প্রতি আমরা ‘সমন্বিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মহাপরিকল্পনা (আইপিইএমপি)’ প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছি। এর খসড়া ইতোমধ্যে প্রস্তুত হয়েছে। আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে অনতিবিলম্বে প্রকাশ করব এবং বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেব।

তিনি বলেন, আইপিইএমপিতে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তিনটি বিশেষ বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এর একটি বিষয় হলো, প্রাথমিক জ্বালানির বহুমুখীকরণ। আমাদের গ্যাস ছাড়া আর সব জ্বালানির জন্য আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়। এজন্য আইপিইএমপিতে আমরা প্রাথমিক জ্বালানির ডাইভারসিফিকেশনের ওপর জোর দিয়েছি। গ্যাসের পাশাপাশি কয়লা, এলএনজি, পারমাণবিক বিদ্যুৎ, ওয়েস্ট এনার্জি, সৌর বিদ্যুৎ, উইন্ড এনার্জি- এসব বিষয় সন্নিবেশ করে জ্বালানি নিরাপত্তা প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে আইপিইএমপিতে।

তিনি আরও বলেন দ্বিতীয়ত আমরা জোর দিয়েছি ট্রানজেশন টু ক্লিন এনার্জি। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে ক্রমান্বয়ে বের হয়ে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। কৃষি জমি বাঁচিয়ে যতটুকু উৎপাদন করা যায়, আমরা সেই উদ্যোগ নিয়েছি।

বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব বলেন, আইপিইএমপিতে আরেকটি বিষয়ে আমরা জোর দিয়েছি। সেটি হলো- আমাদের যেহেতু প্রাথমিক জ্বালানির জন্য অনেকখানি আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়, সুতরাং আমরা যেন দেশের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রায় আমদানি করা জ্বালানির সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারি। সেজন্য এনার্জি ইফিসিয়েন্সি ও কনজারভেশনকে আইপিইএমপিতে যথাযথভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা এ স্লোগান জনপ্রিয় করতে চাই যে, এক ইউনিট বিদ্যুৎ সাশ্রয় তিন ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সমান। যন্ত্রপাতি ব্যবহার ও সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে এনার্জি ইফিসিয়েন্সি ও কনজারভেশনটাকে একটা আন্দোলনে রূপ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। আইপিইএমপিতে এর যথাযথ প্রতিফলনও রয়েছে।

হাবিবুর রহমান জানান, কোনো নির্দিষ্ট দেশ থেকে না করে জ্বালানি আমদানি কীভাবে বহুমুখী উৎস থেকে করা যায়, সেটির গুরুত্বও আমরা অনুধাবন করছি। পাশাপাশি সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে, তা ব্যাটারিতে সংরক্ষণের মাধ্যমে পিক আওয়ারে কীভাবে ব্যবহার করা যায়, সেই প্রযুক্তি নিয়েও আমরা কাজ করছি।

বাংলাদেশ প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যেসব প্রকল্প লাইনআপ করেছি, তাতে আগামী দুবছরের মধ্যে হয়তো আরও দুই-তিন হাজার মেগাওয়াট জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করতে পারব। আপনারা জেনে খুশি হবেন, আমাদের একটি বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলক উৎপাদনে রয়েছে। আমরা আরও দুটি বায়ুভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য কাজ করছি। এর একটি মোংলায় ৫৫ মেগাওয়াট, আরেকটি কক্সবাজারে ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন। বিনিয়োগকারীদের এলওআই (লেটার অব ইনটেন্ট-সম্মতিপত্র) ইস্যুর কাজটি এখন প্রক্রিয়াধীন। এর পাশাপাশি বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও সরকার নজর দিচ্ছে। অফশোরে বায়ু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সম্ভাব্যতা যাচাইসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।

তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর নাগাদ ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে আসবে। পরবর্তী সময়ে আরও সক্ষমতা সম্পন্ন অন্তত একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী প্রধান অতিথি এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ওয়াসিকা আয়শা খান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০২৩
জিসিজি/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।