ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

পরিত্যক্ত কূপ থেকে মিলবে দিনে ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২৩
পরিত্যক্ত কূপ থেকে মিলবে দিনে ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস

সিলেট: এবার সিলেটের কৈলাশটিলা গ্যাসক্ষেত্রের একটি পরিত্যক্ত কূপে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। এই কূপ থেকে প্রতিদিন ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আগামী সপ্তাহ থেকে এই কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের (এসজিএফএল) কর্মকর্তারা।

এসজিএফএল সূত্র জানায়, সিলেটের গোলাপগঞ্জ কৈলাশটিলা-২ নম্বর কূপে দীর্ঘদিন গ্যাস উত্তোলন বন্ধ ছিল। গত ২৭ জুলাই এই কূপ পুনঃখনন শুরু হয়। খননের পর চলতি সপ্তাহে এই কূপে গ্যাসের সন্ধান মিলল।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার জ্বালানি সংকট নিরসনে গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে দেশের ৪৬টি কূপে অনুসন্ধান, খনন ও পুনঃখননের পরিকল্পনা নিয়েছে, যা ২০২৫ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন হলে ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বাড়বে, এমনটি আশা করা যাচ্ছে।

এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের (এসজিএফএল) আওতাধীন ১৪টি কূপ খনন ও পুনঃখনন চলমান রয়েছে। এরমধ্যে তিনটির খনন কাজ শেষে গত বছর থেকে উৎপাদন শুরু হয়। এবার আরেকটি কূপ উৎপাদন শুরুর অপেক্ষায় রয়েছে।

সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) প্রকৌশলী আব্দুল জলিল প্রামাণিক এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, পরিত্যাক্ত কূপ থেকে গ্যাস উৎপাদনে যেতে আরও সপ্তাহখানেক সময় লাগবে। আগামী সপ্তাহে এই কূপ থেকে জাতীয় গ্রিড লাইনে গ্যাস সরবরাহ করা যাবে। আর প্রতিদিন এই কূপ থেকে ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এই কর্মকর্তা বলেন, পরিত্যক্ত থাকা কূপের একটি স্তর (লেয়ার) থেকে আগে গ্যাস উৎপাদন করা হয়েছিল। ওই স্তরে পানি চলে আসায় উৎপাদন বন্ধ ছিল। সাময়িকভাবে বন্ধ থাকা এই কূপ পুনঃখনন কাজে আরও একাধিক স্তরের সন্ধান পাওয়া গেছে। গত ৯ ও ১১ নভেম্বর সেখানে পরীক্ষা করে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে।

তিনি আরও বলেন, গ্যাসের সঙ্গে এই কূপের প্রাপ্ত উপজাত থেকে দৈনিক ৭০ ব্যারেল কনডেনসেট উৎপাদন করা যাবে। এসজিএফএলের নিজস্ব অর্থায়নে করা কূপটির ওয়ার্কওভারে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৭১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

গত বছর সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের আওতাধীন সিলেট-৮, কৈলাশটিলা-৭ ও বিয়ানীবাজার-১ নামে তিনটি পরিত্যক্ত কূপ পুনঃখনন করা হয়। এসব কূপ থেকে দৈনিক ১৬ থেকে ১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করা হচ্ছে। বর্তমানে এসজিএফএলের ১৩টি কূপ গ্যাস উৎপাদনে রয়েছে। এগুলো থেকে দৈনিক ৯৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশব্যাপী বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ ও সম্প্রসারণ প্রকল্পসহ আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরমধ্যে সিলেট জেলায় ৮টি দপ্তরের ১৫টি প্রকল্পের অধীন বিভিন্ন অবকাঠামোর উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরমধ্যে গোলাপগঞ্জ কৈশালটিলা-১০ নং (অনুসন্ধান) কূপের উদ্বোধন করেন।

সংশ্লিষ্টদের দেওয়া তথ্যমতে, সিলেটের হরিপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায় ১৯৫৫ সালে। পরবর্তীতে একের পর এক গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হতে থাকে। বর্তমানে এসজিএফএলের আওতায় হরিপুর গ্যাস ফিল্ড, রশিদপুর গ্যাস ফিল্ড, ছাতক গ্যাস ফিল্ড, কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ড ও বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ডসহ ৫টি কূপ রয়েছে। এর মধ্যে ছাতক গ্যাস ফিল্ড পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। অন্য ১৩টি কূপ থেকে বর্তমানে প্রতিদিন ৯৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে, যা জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ চলমান রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২৩
এনইউ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।