ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশে জিইর নতুন প্রকল্প

ডিপ্লোম্যটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০১২
বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশে জিইর নতুন প্রকল্প

ঢাকা: জেনারেল ইলেকট্রিক (জিই) ৮ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যমানের তিনটি গ্যাস টারবাইন সরবরাহ করবে। এ লক্ষ্যে বুধবার হোটেল ওয়েস্টিনে জিই এনার্জি, আইসোলাক্স ও সামিট ‍পাওয়ার এক যৌথ চুক্তিতে সই করেছে।

তিনটি গ্যাস টারবাইনের দুটি ব্যবহার হবে দুটি নতুন বিদ্যুৎ প্রকল্পে, যা থেকে ৬৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে।
বাংলাদেশে এই প্রথম জিইর উচ্চমানসম্পন্ন গ্যাস টারবাইন ব্যবহৃত হচ্ছে, যা দিয়ে সার্বক্ষণিক, বিশ্বাসযোগ্য ও কম নির্গমনযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে।

এছাড়া স্পেনের প্রতিষ্ঠান আইসোলাক্স ইনজেনারিয়া এসএর কাছে জিই পাওয়ার অ্যান্ড ওয়াটার একটি ৯ এফ- থ্রি সিরিজ গ্যাস টারবাইন ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ করবে। আইনোলাক্স সিদ্ধিরগঞ্জে পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণ করবে।
দ্বিতীয় ৯ এফ- থ্রি সিরিজ গ্যাস টারবাইন ব্যবহৃত হবে সামিট কর্পোরেশনের বিবিয়ানা বিদ্যুৎ প্লান্টে।

চুক্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি ও বিদ্যুৎ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এনামুল হক, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডান ডব্লিউ মজিনা, জিইর চেয়ারম্যান জেফরি ইমেল্ট, জিই (ভারত) এর সিইও জন ফ্ল্যানেরি, আইসোলাক্সের চেয়ারম্যান লুইস ডেলসো এবং সামিট কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান আজিজ খান।

প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি ও বিদ্যুৎ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের দ্বারে দ্বারে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সরকারের যে ধারাবাহিক প্রতিজ্ঞা রয়েছে-তা সফল করার জন্য গুরুত্বপ‍ূর্ণ দুটি পদক্ষেপ হচ্ছে সিদ্ধিরগঞ্জ ও বিবিয়ানা প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন। জিইর সঙ্গে এই সহযোগিতা চুক্তি পুরো দেশকেই অনেকদূর এগিয়ে দেবে বলে আমার ধারনা। ”

জিইর চেয়ারম্যান জেফরি আর ইমেল্ট বলেন, “গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি লক্ষ্য করার মতো। জিই বাংলাদেশের গ্রাহক ও সরকারকে সকলপ্রকার প্রযুক্তিগত সাহায্য করবে। এই বিদ্যুৎ প্রকল্প দুটি বাংলাদেশের সমৃদ্ধি ও দ্রুত নগরায়নের চিহ্নস্বরূপ। ফলে এখান থেকেই ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদার সমাধান হবে। ” জিই বাংলাদেশের মানুষের উন্নত ও সমৃদ্ধ জীবন কামনা করেন।  

আইসোলাক্সের চেয়ারম্যান লুইস ডেলসো বলেন, “বাংলাদেশে নিরাপদ ও বিশ্বাসযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সিদ্ধিরগঞ্জ প্রকল্পটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমরা বিশ্বাস করি, বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত জিইর উন্নত প্রযুক্তির গ্যাস টারবাইন এই প্রকল্পের জন্য অত্যন্ত অর্থবহ হবে। ’

সামিট কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান জনাব আজিজ খান বলেন, “সময়মতো সরবরাহ ও শক্তিশালী প্রযুক্তিগত দক্ষতার জন্য জিই সারা পৃথিবীতে প্রসিদ্ধ। এর আগেও আমরা মেঘনা ঘাট প্রকল্পে জিইর সাথে কাজ করেছি এবং টারবাইনগুলি ২০১৩ এর সেপ্টেম্বরে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে। আমরা আশা করি বিবিয়ানা প্রকল্পেও জিই আমাদের সঠিক সহযোগী হবে। ”

সিদ্ধিরগঞ্জ ও বিবিয়ানা প্রকল্প যথাক্রমে ২০১৪ ও ২০১৫ সাল থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাবে। আগামী ৬-৮ বছরের মধ্যে এই প্ল্যান্ট দুটি সরকারিভাবে উৎপাদিত বিদ্যুতের সাথে আরো ৮ থেকে ২০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। বর্তমানে বাংলাদেশের ৫০ ভাগ এলাকা বিদ্যুতের আওতায়। আর পিক আওয়ারের মোট প্রয়োজন থেকে মাত্র ১.৪ গিগাওয়াট কম বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়।

৫০ হার্টজ এপ্লিকেশনের জিই ফ্রেম ৯এফ থ্রি-সিরিজ উন্নতমানের প্রযুক্তির গ্যাস টারবাইন বিদ্যুতের উচ্চমান, সহজলভ্যতা, বিশ্বস্ততা ও স্বল্প ব্যয় নিশ্চিত করে। বর্তমানে এই প্রযুক্তি বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ সহজ করে তুলেছে, যা এলাকাভিত্তিক চাহিদা ও ব্যবহার উপযোগিতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এটি সহজেই ও দ্রুততার সাথে বিভিন্ন এলাকার নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের উৎপাদন, চাহিদা বা ব্যবহারকে সহায়তা করতে পারে। এই প্রযুক্তি অপারেটরকে বিদ্যুতের পরিবর্তনশীল চাহিদার সঠিক সমাধান দিতে সহায়তা করছে এবং সারাবিশ্বে বর্তমানে ঘণ্টার হিসেবে এই প্রযুক্তি ১০.৫ মিলিয়ন ঘণ্টা চালিত হয়েছে।     

জিই পাওয়ার অ্যান্ড ওয়াটার গ্রাহকদের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন, শক্তি নির্গমন, পানি প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রযুক্তিসহ নানা রকম সমাধান দিয়ে থাকে। জিই পাওয়ার অ্যান্ড ওয়াটার শক্তিখাতের সকল শাখা যেমন: বাতাস, সৌরবিদ্যুৎ, বায়োগ্যাস ও বিকল্প জ্বালানি, কয়লা, তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসসহ অন্যান্য শাখায় কাজ করে থাকে।   পানির পর্যাপ্ততা ও গুনাগুননির্ভর সকল জটিল চ্যালেঞ্জ প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার মাধ্যমে সমাধান করে থাকে।
এদের প্রধান কার্যালয় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, ০৩ অক্টোবর , ২০১২
কেজেড/ সম্পাদনা : শাহেদ হোসেন, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।