ঢাকা, রবিবার, ২১ পৌষ ১৪৩১, ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪ রজব ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

চতুর্থ প্রজন্মের পরমাণু বিদ্যুৎ কমপ্লেক্স বাস্তবায়ন করছে রাশিয়া

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২৫
চতুর্থ প্রজন্মের পরমাণু বিদ্যুৎ কমপ্লেক্স বাস্তবায়ন করছে রাশিয়া

ঢাকা: রাশিয়ার টমস অঞ্চলে নির্মিত হচ্ছে চতুর্থ প্রজন্মের একটি পরীক্ষামূলক পরমাণু বিদ্যুৎ কমপ্লেক্স। রাশিয়া রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশন-রোসাটমের পরমাণু জ্বালানি বিভাগের অন্তর্ভুক্ত সাইবেরিয়া কেমিক্যাল কম্বাইনের সাইটে ‘পাইলট ডেমন্সট্রেশন এনার্জি কমপ্লেক্স’ (পিডিইসি) বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে।

এ কমপ্লেক্সে তিনটি পারস্পরিক সংযুক্ত স্থাপনা থাকবে, যার মধ্যে রয়েছে ডেনস নাইট্রাইড ইউরেনিয়াম-প্লুটোনিয়াম পারমাণবিক জ্বালানি উৎপাদন কারখানা, চতুর্থ প্রজন্মের লেড কুল্যান্টভিত্তিক ফাস্ট নিউট্রন রিয়্যাক্টর ব্রেস্ট-ওডি-৩০০ (ব্রেস্ট-ওডি-৩০০) এবং ব্যবহৃত পারমাণবিক জ্বালানি পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকারী কারখানা।

বিশ্বে প্রথমবারের মতো কোনো একক সাইটে একইসঙ্গে নির্মিত হচ্ছে ক্লোজড ফুয়েল সাইকেলসহ ফাস্ট রিয়্যাক্টর। এখানে ব্যবহৃত জ্বালানি পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করে নতুন জ্বালানি তৈরি হবে। এর ফলে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাইরের কোনো জ্বালানি উৎসের ওপর নির্ভরশীল থাকবে না বললেই চলে।

এ যুগান্তকারী কমপ্লেক্সে প্রথম স্থাপনাটি অর্থাৎ ব্রেস্ট-ওডি-৩০০ ফাস্ট নিউট্রন রিয়্যাক্টরের জন্য জ্বালানি তৈরির কারখানা ইতোমধ্যেই চালু করা হয়েছে। কারখানাটি ইতোমধ্যে ইউরেনিয়াম নাইট্রাইড জ্বালানি পিলেট থেকে রিয়্যাক্টরের জন্য উপযুক্ত জ্বালানির ডামি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। প্লুটোনিয়াম ব্যবহারের ব্যাপারে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেলে শুরু হবে মিক্সড ডেন্স নাইট্রাইড ইউরেনিয়াম-প্লুটোনিয়াম (এমএনইউপি) জ্বালানির উৎপাদন। রিয়্যাক্টরে লোড করার আগে দুই শতাধিক এমএনইউপি জ্বালানি বান্ডেল তৈরি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

নতুন এ এমএনইউপি জ্বালানি তৈরির জন্য রুশ বিজ্ঞানীরা একটি অনন্য প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। পরীক্ষামূলকভাবে এ জ্বালানি এলিমেন্টগুলো বিওআর-৬০ ফাস্ট গবেষণা রিয়্যাক্টর ও বেলাইয়ার্স্ক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিএন-৬০০ ফাস্ট রিয়্যাক্টরে ব্যবহার করে সফলতা পাওয়া গেছে।

রসাটমের প্রধান নির্বাহী আলেক্সি লিখাচেভ জানান, তারা চতুর্থ প্রজন্মের পারমাণবিক প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে সবার থেকে এগিয়ে আছে।  

তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থার সংজ্ঞা অনুযায়ী এ প্রজন্মের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো জ্বালানি কাঁচামাল ব্যবহারে অধিকতর দক্ষ, পরিচালনার ক্ষেত্রে অধিক নিরাপদ এবং অনেক কম পারমাণবিক বর্জ্য উৎপাদন করে। রসাটমের পিডিইসি প্রকল্পটিতে যে প্রযুক্তিগত সমাধান ব্যবহৃত হবে তা এসব নীতির পরিপূর্ণ প্রতিফলন ঘটাবে।

ব্রেস্ট-ওডি-৩০০ হবে বিশ্বের প্রথম লিড কুল্যান্টভিত্তিক ফাস্ট রিয়্যাক্টর, যার স্থাপত্য তথাকথিত প্রাকৃতিক নিরাপত্তা ভিত্তির ওপর গড়ে উঠেছে।   এমএনইউপি জ্বালানি ব্যবহারের ফলে রিয়্যাক্টরের দক্ষতা বাড়ানো নিশ্চিত হবে। এ জ্বালানি তৈরিতে ব্যবহৃত হবে পারমাণবিক জ্বালানি চক্রে বাই প্রোডাক্ট হিসেবে পাওয়া ইউরেনিয়াম ও প্লুটোনিয়াম। এগুলো ডিপ্লিটিড ইউরেনিয়াম ও প্লুটোনিয়াম। এ রিয়্যাক্টরে পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করার মাধ্যমে ইতোমধ্যে ব্যবহৃত জ্বালানি এসেম্বলি থেকে পাওয়া নতুন জ্বালানি ব্যবহৃত হবে। অতএব ব্যবহৃত জ্বালানি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা থাকবে না, পারমাণবিক বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণ এবং এর তেজস্ক্রিয়তা তাৎপর্যপূর্ণভাবে হ্রাস পাবে।

বাংলাদেশ সময়: ০০২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০২৫
এসকে/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।