ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াট চায় পল্লী বিদ্যুৎ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৫ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৪
সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াট চায় পল্লী বিদ্যুৎ

ঢাকা: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সঙ্গে বৈঠকে চাহিদা অনুযায়ী সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চেয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এই পরিমাণ বিদ্যুৎ পেলে চলতি বিশ্বকাপ ও আগামী রমজানে লোডশেডিং অনেকটাই কাটিয়ে উঠা যাবে বলে ধারণা কর্মকর্তাদের।



শনিবার পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে সারাদেশের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজারদের সঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর এ বৈঠক হয়।

বৈঠক সূত্র জানায়, প্রতিমন্ত্রীর সামনে লোডশেডিংয়ের কথা তুলে ধরেন সারা দেশ থেকে আগত মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। তারা বলেন, চলতি মাসে লোডশেডিং চরম আকার ধারণ করেছে।

জিএম’রা বলেছেন, বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা চলছে, সামনে রমজান আসছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ না বাড়লে তারা রোষানলে পড়তে পারেন।

অন্যদিকে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মঈন উদ্দীন বলেন, আমাদের গ্রাহক সংখ্যা ১ কোটি ২ লাখ। যা দেশের মোট গ্রাহকের ৭০ শতাংশ। আর বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৮০০ মেগাওয়াটে মতো। যা উৎপাদিত বিদ্যুতের ৫১ শতাংশের মতো।


কিন্তু আরইবিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে মাত্র ২৬ থেকে ২৭’শ মেগাওয়াট। মাঝে মাঝে ঠিক দেওয়া হলেও প্রায়ই ৯’শ মেগাওয়াটের উপর লোডশেড দিতে হচ্ছে। এতে গড়ে ৩ ঘণ্টার মতো লোডশেডিং হচ্ছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে পল্লী বিদুতের জন্য সরবরাহ বাড়ানোর দাবি জানান চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, আমাদের সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াট সরবরাহ দিলে কোনো সমস্যা থাকবে না। তখন সর্বোচ্চ ১ ঘণ্টা লোডশেডিং হতে পারে। জনগণ তা মেনে নিবে।
আরইবি চেয়ারম্যানের বক্তব্যের পর প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি আমাকে বলেছে, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির যা চাহিদা রয়েছে, তাই দেওয়া হচ্ছে। কিছুক্ষেত্রে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি চাহিদা থাকলে সরবরাহ ক্যাপাসিটি না থাকায় নিতে পারছে না।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, কেন এমন হচ্ছে সবাইকে নিয়ে বসতে হবে। সবাইকে নিয়ে সমস্যার সমাধান করা হবে।

কর্মকর্তাদের ঘনঘন বসার কথাও জানান প্রতিমন্ত্রী।

এ সময় তিনি বলেন, আগে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং ছিলো। মানুষ কিন্তু সে কথা ভুলে গেছে। মানুষ এখন লোডশেডিংমুক্ত বিদ্যুৎ চায়। আমার মনে হয়, মানসম্মত ও লোডশেডিংমুক্ত বিদ্যুৎ দিতে আরও ৩ বছর সময় প্রয়োজন রয়েছে।

জনগণকে বুঝাতে হবে। তারা যেন এই সময়টুকু আমাদেরকে দেয়। তাদেরকে আমরা মানসম্মত বিদ্যুৎ দিতে কাজ করে যাচ্ছি। জনগণকে বুঝালে জনগণ বুঝে, যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।

বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানে ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেভাবে ঘুষ-দুর্নীতির কথা শোনা যাচ্ছে, এটা রোধ হওয়া দরকার।

কর্মকর্তারা ঘুষ-দুর্নীতির কথা স্বীকার করে বলেন, ঠিকাদার ও কর্মচারীরা ঘুষ-দুর্নীতি করছে। কর্মচারীরা আজীবন একই কর্মস্থলে থাকছে। তাদের বদলির কোনো বিধান নেই। এ কারণে স্থানীয়দের সঙ্গে সখ্যতার সুযোগে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন।

এ ছাড়া রাজনৈতিক চাপের কথাও উল্লেখ করেন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। তারা কর্মচারীদের বদলির বিধান করা ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে কোম্পানিতে রূপান্তরের দাবি জানান।

জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক চাপ থাকাই স্বাভাবিক। এটা বুঝিয়ে বলবেন। না হলে আমাকে বলবেন। আমি আছি সব চাপ সহ্য করার জন্য।
জনগণকে বুঝাতে হবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনারাই পারেন সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জল করতে। এখন একটু কষ্ট বেশি করেন, সব ঠিক হয়ে যাবে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণে গ্রাহক হয়রানি এবং লোডশেড নিয়ে করণীয় শীর্ষক সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সদস্য প্রকৌশলী শেখ নুরুল আবসার, যুবলীগ নেতা এন আই আহমদ সৈকত, ৭২টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম ও পদস্থ কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।